রাতে ঘুম না হওয়ার কারণ ও প্রতিকার সম্পর্কে জানুন


ঘুম হচ্ছে শরীর সুস্থ রাখার অন্যতম বাহক। শরীরকে সুস্থ রাখার জন্য প্রতিদিন ৭ থেকে ৮ ঘন্টা ঘুমের প্রয়োজন। ৭ থেকে ৮ ঘণ্টার কম ঘুমালে শরীর খারাপ হতে পারে। তবে বয়স ভেদে এর ভিন্নতা রয়েছে।
রাতে পর্যাপ্ত ঘুম না হওয়ার বিভিন্ন কারণ রয়েছে। তাই এই পোস্টে রাতে ঘুম না হওয়ার কারণ এবং এর প্রতিকার নিয়ে আলোচনা করব। তাই পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

পেজ সূচিপত্রঃ রাতে ঘুম না হওয়ার কারণ ও প্রতিকার

ভূমিকা

ঘুম ছাড়া মানুষ সুস্থ থাকতে পারে না। পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম না হলে একজন মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়তে পারে। এই ঘুমের জন্য মানুষ অনেক কিছু খেয়ে থাকে। বিভিন্ন রকম ওষুধ খাওয়ার জন্য শরীরের উপর ক্ষতিকর প্রভাব পড়তে পারে।ঠিকমতো ঘুম না হলে শরীর ঝিমানো শুরু হয়, মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায়, কোন কাজে মনোযোগ আসে না। তাই রাতে ঘুম না হওয়ার কারণ কি ও প্রতিকার কি তা জানতে হবে। চলুন জেনে নিই।

রাতে ঘুম না হলে করণীয় 

ঘুম না হওয়া এখন একটি বড় সমস্যা। তাই ঘুম যেন অতি দ্রুত চলে আসে তার জন্য কিছু উপায় রয়েছে।
  • দিনে হালকা ব্যায়াম করলে সেটি ভালো ঘুমের জন্য বেশ কার্যকরী পদ্ধতি। হালকা ব্যায়াম রাতে ভালো ঘুম আসতে সাহায্য করে। দুপুরে না ঘুমানোই উচিত। কারণ রাতে ঘুম আসতে বাধা সৃষ্টি করে।
  • রাতে ঘুমানোর জন্য ঠান্ডা জায়গা নির্ধারণ করুন কারণ এতে ঘুমটা তাড়াতাড়ি চলে আসবে। ঘরে পর্যাপ্ত বাতাস না ঢুকলে এবং যদি ঘর গরম থাকে তাহলে ঘুমের ক্ষেত্রে সেটি উপযুক্ত না। ঠান্ডা ঘর এক্ষেত্রে ঘুমানোর জন্য উপযুক্ত স্থান।
  • মুখরোচক খাবার রাতে ঘুমের ক্ষেত্রে ব্যাঘাত সৃষ্টি করে। তাই এখনই মুখরোচক খাওয়ার খাওয়া বাদ দিতে হবে।

ঘুম বৃদ্ধির উপায়

এমন অনেক মানুষ রয়েছে তাদের মধ্যে কিছু সংখ্যক মানুষের ঘুম বেশি আবার কিছু মানুষের ঘুম কম। তাই যাদের ঘুম কম হয় তারা নিম্নের উপায় গুলো অনুসরণ করতে পারেন।
  • ঘুমের আগে বাদাম খেলে ভালো ঘুম আসতে সাহায্য করে। ঘুমের আগে মেডিটেশন করলে স্নায়ু গুলো রিলাক্স থাকবে এবং নিশ্চিন্তে ঘুমানো যায়।
  • ঘরের মধ্যে লাল আলো ব্যবহার করা যায় কারণ লাল আলোতে মেলাটোনিন নির্গত হয় এবং ঘুম বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। ঘুমোতে যাওয়ার আগে এক গ্লাস দুধ খেলে রাতে ভালো ঘুম হবে। কারণ দুধে অ্যামাইনো এসিড থাকে যা ভালো ঘুমের জন্য খুব উপকার।
  • ঘুমের জাদুকর হচ্ছে মিষ্টি আলু। মিষ্টি আলু খেলে ঘুম ভালো হয় কারণ এতে পটাশিয়াম রয়েছে যা ঘুম আসার ক্ষেত্রে খুবই সহায়ক। প্রতিদিন শরীর চর্চার মাধ্যমে ঘুম বৃদ্ধি করা যায়। লেটুস পাতা ভালো ঘুমের ক্ষেত্রে সাহায্য করে কারণ এতে রয়েছে ল্যাকটুক্যারিয়াম।
সুতরাং রাতে ঘুম না হওয়ার কারণ ও প্রতিকার কি এই সম্পর্কে তাদের ধারণা ছিল না তারা অবশ্যই ধারণা পেয়ে গেছেন এবং সাথে এটাও জেনে গেছেন যে, কিভাবে ঘুম বৃদ্ধি করা যায় তার উপায়।

কি খেলে রাতে ঘুম আসে না

সাধারণত নিম্নোক্ত জিনিসগুলো খেলে ঘুম আসতে চায় না-
  • চা-কফি পান করলে রাতে ঘুম আশার ক্ষেত্রে ব্যাঘাত সৃষ্টি করে। এগুলো পান করার ফলে রাতের ঘুম কেটে যায়। তাই এই জাতীয় জিনিস সন্ধ্যার পর না খাওয়াই ভালো।
  • রাতে ভারী খাবার গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকুন। রাতে ভারী কাজ না করার ফলে খাবার কম হজম হয়। যার ফলে খাবারগুলো রয়ে যাই। আর সেক্ষেত্রে ঘুম আসতে সমস্যা হয়।
  • রাতে ঝাল জাতীয় খাদ্য গ্রহণ করা যাবে না। কারণ এতে হজমে সমস্যা হয় এবং ঘুম আসতে চায় না। ঘুম না আসার আরেকটি কারণ হচ্ছে মিষ্টি জাতীয় খাদ্য। এই মিষ্টি জাতীয় খাদ্য শরীরে উত্তেজনা তৈরি করে যা ঘুমে সমস্যার সৃষ্টি করে।
রাতে ঘুম না হওয়ার কারণ

ভালো ঘুমের জন্য কি করা উচিত

  • রাতে ঘুমোতে যাওয়ার দুই ঘন্টা পূর্বে খাবার গ্রহণ করুন। ভালো ঘুম আসার ক্ষেত্রে এটা অনেক কার্যকরী পদ্ধতি। সন্ধ্যার পর অ্যালকোহল জাতীয় খাবার পরিহার করুন কারণ অ্যালকোহল জাতীয় খাবার ঘুমের ক্ষেত্রে বাধার সৃষ্টি করে।
  • দুপুরের ঘুম কে ঝেড়ে ফেলুন কারণ এটা রাতের ঘুমকে কেড়ে নেয়। ভালো ঘুমের জন্য নরম বালিশ বাছাই করা একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ। ভালো ঘুমের জন্য নরম বালিশ বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ঘুমের ক্ষেত্রে বিঘ্নতা সৃষ্টির প্রধান কারণ হতে পারে পোষ্য প্রাণীর সাথে এক বিছানায় ঘুমানো। তাই ভালো ঘুমের জন্য এটি পরিহার করতে হবে।
  • ঘুমানোর সময় শরীরের পাতলা কাপড় পরিধান করতে হবে এতে করে শরীরের মধ্যে বাতাস অনায়াসে প্রবেশ করতে পারবে এবং শরীর ঠান্ডা থাকবে। যার ফলে ঘুম ভালো হবে।

রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমানোর উপায়

ঘুম না হওয়াটা এমন একটা সমস্যা বা রোগ যে আপনি ইচ্ছা করলে যখন তখন এই রোগের ওষুধ গ্রহণ করতে পারবেন না। আর এই ঘুমকে কাছে নিয়ে আসতে জানতে হবে কিছু কৌশল।
  • প্রথমত রুম ঠান্ডা রাখতে হবে। ঘুমের সমস্যা তখনই হবে যখন রুমের তাপমাত্রা বেড়ে যাবে। তাই রুম ঠান্ডা রাখলে ঘুম দ্রুত চলে আসবে।
  • ঘুম তাড়াতাড়ি আসার জন্য রাতে হালকা গরম পানি দিয়ে গোসল করা যায়। কারণ গরম পানি দিয়ে গোসল করলে শরীরের তাপমাত্রা অনেকাংশে হ্রাস পায়। এক্ষেত্রে তাড়াতাড়ি ঘুম চলে আসবে।  
  • আবার যখন অন্ধকার থাকে তখন মেলাটোনিন হরমোন নির্গত হয় যা ঘুমের জন্য খুবই দরকার। তাড়াতাড়ি ঘুম আসার জন্য আপনার রুম কালো পর্দা দিয়ে ঘিরে রাখুন। রাতে তাড়াতাড়ি ঘুম আসার জন্য দিনের ঘুম পরিহার করুন।

লেখকের মন্তব্য বা শেষ কথা

আজকের উপরের এই আলোচনার মাধ্যমে সবাই জানতে পেরেছেন যে ঘুম না আসার কারণ এবং তার প্রতিকারগুলো কি কি হতে পারে। আশা করি উপরের নির্দেশনাগুলো মেনে চললে ঘুমের সমস্যার সমাধান হবে। পোস্টটি যদি ভালো লাগে তাহলে অবশ্যই বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন। পোস্টটি কষ্ট করে পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।




Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url