পরিবারের অশান্তি দূর করার উপায়-পরিবারে কিভাবে শান্তি বজায় রাখা যায় জেনে নিন



 
আসসালামু আলাইকুম।আজকে পরিবার নিয়ে আলোচনা করা হবে, যেটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।পরিবার ছাড়া চলা অসম্ভব।এমন অনেক পরিবার আছে যে, ঝগড়ার মাধ্যমে পরিবারটা ভেঙ্গে যায়। তাই পরিবারের একে অপরের মধ্যে ভালোবাসা থাকাটা খুবই প্রয়োজন।
পরিবারের কিভাবে শান্তি বজায় রাখা যায়-পরিবারের গুরুত্ব
তাই পরিবারের একে অপরের মধ্যে ভালোবাসা না থাকলে পরিবারে অশান্তি লেগেই থাকবে। তাই পরিবারে শান্তি ফিরিয়ে নিয়ে আসা সকল সদস্যের কর্তব্য।তাহলে আসুন পরিবারের অশান্তি দূর করে, পরিবারে কিভাবে শান্তি বজায় রাখা যায় সেই সম্পর্কে জেনে নিই।

পেজ সূচিপত্রঃ পপরিবারের কিভাবে শান্তি বজায় রাখা যায়-পরিবারের গুরুত্ব

ভূমিকা

পরিবার হচ্ছে এমন একটি জায়গা যেখানে একাধিক ব্যক্তি একসঙ্গে থাকে। এবং তাদের মধ্যে রক্ত বা আত্মীয়তার সম্পর্ক থাকে। পরিবার বলতে এমন একটি সংঘ বুঝাই যেখানে স্বামী-স্ত্রী, সন্তান একত্রে থাকে।যদি এমন হয় যে পরিবারের মধ্যে সব সময় অশান্তি বিরাজ করছে।তাহলে পরিবারের মধ্যে সুখ শান্তি বিরাজ করে না।দুই একটি কথা কাটাকাটির মাধ্যমে অনেক পরিবারে ঝগড়া লেগে যায়। কখন যে ঝগড়ার রূপ নিয়েছে তা হয়তো আপনার বোধগম্য হবেনা।তাই পরিবারে কিভাবে শান্তি বজায় রাখা যায় সেই বিষয়ে আগে জানতে হবে।পরিবারের মধ্যে শান্তি বজায় রাখার জন্য পরিবারের সদস্যদের মধ্যে দৃঢ় বন্ধন, ভালোবাসা ইত্যাদি থাকা খুব দরকার।তাহলেই একটি সংসার সুখের হয়।আর সংসার সুখের হলেই সেই সংসারে শান্তি বিরাজ করে।

সংসারে অশান্তি দূর করার উপায়

একটি সংসারে শান্তি-অশান্তি থাকবে এটাই স্বাভাবিক। এক ছাদের তলায় বসবাস করতে গিয়ে দুজনের মধ্যে ছোটখাটো ঝামেলা হয়ে থাকে। কিন্তু এই ছোটখাটো ঝামেলা নিজেদের মধ্যেই সমাধান করে নিতে হবে। কিন্তু এমন এক পর্যায়ে আসে যখন কেউ কারো কাছে হার মানতে রাজি নয় তখন ওই ছোটখাটো ঝামেলা গুলো বড় রূপ নেই। কিন্তু সংসার সুখী রাখতে হলে আপনাকেও কিছু নিয়মকানুন মানতে হবে। তাই একটি পরিবারের অশান্তি দূর করার উপায় এবং শান্তি বজায় রাখার জন্য নিচের বিষয়গুলো অনুসরণ করে চলুন-
প্রথমতঃ একে অপরকে দোষারোপ করা থেকে বিরত থাকুন। এই কাজটি করলে সংসারে অশান্তি বেড়ে যায়। আপনার স্বামীর আচরণ, চলাফেরা আপনার পছন্দ নাও হতে পারে। সেক্ষেত্রে অভিযোগ করা থেকে বিরত থাকতে হবে। তাহলে সংসারে শান্তি বজায় থাকবে।
দ্বিতীয়তঃ যতই ঝগড়া হোক একে অপরের প্রতি ভালবাসা বজায় রাখুন। এই ভালোবাসা থাকলে অনেক বিষয় সহজেই সমাধান করা যায়। এক্ষেত্রে সংসারে অশান্তি দূর হয়ে যায়।
তৃতীয়তঃ সংসারে অশান্তি দূর করতে হলে বা শান্তি বজায় রাখার জন্য আপনাকে অবশ্যই স্বার্থত্যাগ করা প্রয়োজন। কোন বদ অভ্যাস থাকলে সেগুলো ঝেড়ে ফেলুন। আপনার কাছের মানুষটির চাওয়া পাওয়া গুলো অনেক গুরুত্ব দিতে হবে। তাহলে একটি সংসারে শান্তি ফিরে আসবে।

ঘরে অশান্তি দূর করার উপায়

একটি ঘরে যখন অশান্তি বিরাজ করে তখন সেই ঘরে শান্তি ফিরিয়ে আনার জন্য আপনাকে কিছু বিষয় মাথায় রাখতে হবে-
যেমন,ঘরে যদি বাস্তুদোষ থাকে তাহলে সেটি কাটানোর ব্যবস্থা করতে হবে। এক্ষেত্রে উইন্ড চাইম বা পবন ঘন্টা খুবই সহায়ক। বাস্তু দোষ কাটানোর লক্ষ্যে এটি গৃহের উপযুক্ত স্থানে লাগানো অধিক জরুরী। এটি উপযুক্ত স্থানে লাগালে বাড়ির মধ্যে ইতিবাচক ফলাফল পাওয়া যায়। ঘরে সুখ ফিরিয়ে আনে। এর মধুর সুর ঘরের পরিবেশ শান্ত রাখে। তাহলে আমরা বুঝতে পারলাম পবন ঘন্টা কিভাবে ব্যবহার করলে ঘরে শান্তি ফিরে আসবে।
পরিবারে অশান্তি

কিভাবে পিতামাতা বাড়িতে শান্তি প্রচার করতে পারে

যার পিতা-মাতা বেঁচে আছে, সে অনেক সৌভাগ্যবান। সে সকল সমস্যাকে তুচ্ছ মনে করে। আর যার পিতামাতা নেই, সেই সন্তানের মাথায় ছাতা ধরার মতো কেউ নেই। মনে হয় সে তীব্র খরার মধ্যে অবস্থান করছে। যদি পিতা মাতা জীবিত না থাকে তাহলে যতই ধন-সম্পদ থাকুক না কেন সে কখনো শান্তিতে থাকতে পারে না। যখন জীবনে অনেক কষ্ট আসে, তখন সবাই মুখ ফিরিয়ে নিলেও, পিতা-মাতা তা করতে পারে না। তখন পিতা-মাতা ছাতার মতো হয়ে ছায়া দেয়।
সন্তানের সকল বিপদে সব সময় তার পাশে থাকে। পিতা-মাতা যখন পৃথিবী থেকে বিদায় নিবে সন্তান তখনই পিতা-মাতার অভাব উপলব্ধি করতে পারবে। যদি সন্তানকে কেউ সবচেয়ে বেশি ভালোবেসে থাকে তাহলে সেটি পিতা-মাতা।

পৃথিবীর সবাই যখন স্বার্থের কারণে আপনার কাছ থেকে সরে যাবে তখন পিতা-মাতা দূরে সরে না গিয়ে পাশে থাকে। যখন কোন সন্তান পিতা-মাতার ছায়াতলে থাকে তখন সে নিশ্চিন্তে থাকে। তখন আপনি নিজেকে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ সুখী মানুষ মনে করবেন।

পরিবারে কিভাবে শান্তি বজায় রাখা যায়

পরিবারে শান্তি বজায় রাখার ক্ষেত্রে সদস্যরাই বিশেষ ভূমিকা পালন করে। কারণ তারাই সবচেয়ে কাছের মানুষ। আপনি পরিবারের শান্তি বজায় রাখার জন্য কিছু পন্থা অবলম্বন করুন। এই পন্থা বা উপায় গুলো কি তা জেনে রাখুন।
অধিকার: পরিবারে যারা আছে তাদের সবার অধিকার সমানভাবে পূরণ করার চেষ্টা করতে হবে। যার যেখানে অবস্থান, তার সেখান থেকে যে অধিকার প্রাপ্য তা তাকে দিন। তাহলে পরিবারে শান্তি বজায় থাকবে।
মতামত: গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোতে সকল সদস্যের মতামত নিন। কারণ মতামত গ্রহণ করা একটি গণতান্ত্রিক পন্থা। সেই মতামত গুলো থেকে উপযুক্ত সিদ্ধান্ত নিন। এতে করে সবার মতামত সমানভাবে বিবেচনা করা হয়। এর ফলে সকল সদস্যই সন্তুষ্ট থাকে।
সাহায্য গ্রহণ করা: এমন এক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে যেখানে সাহায্য গ্রহণ করা খুবই প্রয়োজন। তবে সেখানে সাহায্য নিন। সাহায্য করতে পেরে সেই ব্যক্তি অনেক খুশি থাকে।
গোপনীয়তা বজায় রাখা: পরিবারের সকল সদস্যই একে অন্যের গোপন কথা জানে, আর জানাটাই স্বাভাবিক। তবে কোন সময় এটি প্রকাশ করবেন না এতে করে সংসারে বা পরিবারে অশান্তির সৃষ্টি হয়। যতদূর সম্ভব এটি গোপন রাখুন।
উদারতা: পরিবারের সকল সদস্যই  আপনার মনের মতো কাজটি করতে পারবে তা নয়। তারা যেভাবে কাজটি করেছে আপনার কাছে পছন্দ নাও হতে পারে। তাই এক্ষেত্রে রেগে না গিয়ে বুঝিয়ে দিন। তাদের ক্ষমা করে দিতে পারেন এক্ষেত্রে উদারতার বহিঃপ্রকাশ ঘটে। ফলে আর অশান্তির সৃষ্টি হবে না।
সম্পর্ক ভালো রাখা: পরিবারে অশান্তি দূর করে শান্তি ফিরে আনার জন্য সকল সদস্যদের মধ্যে সম্পর্ক ভালো থাকা খুব প্রয়োজন। সম্পর্ক ভালো থাকলে একে অন্যের মধ্যে বিবাদ সৃষ্টি হয় না। এতে করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয় না।
কিভাবে পরিবারের অশান্তি দূর করার উপায় গুলো প্রয়োগ করে পরিবারে শান্তি বজায় রাখা যায় এই বিষয়ে ধারণা পেলাম।

পরিবারের গুরুত্ব

মানুষের জীবনে অস্তিত্ব বজায় রাখার জন্য পরিবার অপরিহার্য। পরিবার ছাড়া মানুষের একা থাকা অসম্ভব। একজন মানুষ জন্ম থেকে পরিবারে বেড়ে ওঠে। জন্মগ্রহণ করার পর থেকে একজন মানুষ পরিবারের মধ্যেই বেড়ে উঠে, বিভিন্ন কাজকর্মে লিপ্ত হয়, পরিবার থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে এবং শেষে তাকে পরিবারেই মৃত্যুবরণ করতে হয়। মৃত্যুর পরবর্তী কাজগুলো পরিবার সম্পন্ন করে থাকে।
পরিবার
পরিবারের সকল সদস্যের মধ্যে সুখ-দুঃখ, আনন্দ-বেদনা ইত্যাদি ভাগাভাগি করে নিলে সেই পরিবারে সুখ শান্তি বিরাজ করে। পরিবার এমন একটি জায়গা যেখানে কেউ অসুস্থ হয়ে গেলে সকল সদস্যই চিন্তিত হয়ে পড়ে। একজনের খুশিতে সবাই আনন্দিত হয়ে যায়। পরিবার সমাজ গঠনে ভূমিকা রাখে। পরিবার হচ্ছে এমন একটি জায়গা যেখানে মানুষ নিজেকে নিরাপদ মনে করে।

শেষ কথা

একটি পরিবার ছোট হতে পারে আবার বড়ও হতে পারে। প্রতিটি সমাজেই পরিবারের অস্তিত্ব বিদ্যমান। পরিবার হচ্ছে একটি সাজানো ফুলের বাগান। বাগান কেবল পরিচর্যার মাধ্যমেই সুন্দর হয়ে উঠতে পারে। ঠিক তেমনি পরিবারের সকল সদস্যের মধ্যে যদি দৃঢ় বন্ধন না থাকে তাহলে সেই পরিবার ভেঙে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই একটি পরিবারের মধ্যে অশান্তি দূর করে শান্তি ফিরিয়ে আনার জন্য সকল সদস্যের মধ্যে আন্তরিকতা থাকতে হবে।

আর ওপরের পোস্টটি পড়ে আমরা বুঝতে পারলাম যে, সংসারে অশান্তির কারণ গুলো কি এবং পরিবারের অশান্তি দূর করার উপায় কি। আশা করি, পোস্টটি পড়ার মাধ্যমে আপনার উপকার হবে। পোস্টটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ার জন্য ধন্যবাদ এবং পোস্টটি সবার সাথে শেয়ার করে দিন।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url