আপনি কি জানেন আন্তর্জাতিক শিক্ষা দিবস কবে-আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস কবে পালিত হয়


আসসালামু আলাইকুম। আজকের আলোচ্য বিষয় হচ্ছে সাক্ষরতা দিবস নিয়ে। এই দিবস সম্পর্কে অনেকের জানা আছে, আবার অনেকেই জানেন না সাক্ষরতা দিবস কি। এই দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করা হয়। আবার আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস কবে পালিত হয় এই বিষয়ে অনেকের ধারণা নেই।
আন্তর্জাতিক শিক্ষা দিবস কবে-আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস কবে পালিত হয়
আজকে আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। আরো আলোচনা করা হবে দিবসটি কত তারিখে পালন করা হয়। তাই চলুন জেনে নেই আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস কবে পালিত হয় এবং সাক্ষরতা দিবসের সকল খুঁটিনাটি বিষয়গুলো সম্পর্কে।

পেজ সূচিপত্রঃআন্তর্জাতিক শিক্ষা দিবস কবে-আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস কবে পালিত হয়

ভূমিকা

আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস একটি গুরুত্বপূর্ণ দিবস। এই দিবসটির তাৎপর্য অনেক। শিক্ষা গ্রহণের প্রথম ধাপ হচ্ছে স্বাক্ষরতা। এই সাক্ষরতা ব্যক্তির ক্ষমতায়নের অন্যতম একটি মাধ্যম। দারিদ্র কমিয়ে যেন শিক্ষা সকলের কাছে পৌঁছাতে পারে এ ব্যাপারে উদ্যোগ নেওয়া হয়। "এডুকেশন ফর অল" এই কথার ভিত্তিতে এটি করা হয়েছিল। এই কথার সাথে সাথে সাক্ষরতা বিষয়ে কথা হয়।

লিঙ্গ বৈষম্যের ভেদাভেদ ভুলে নারীকে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হতে হবে। কিন্তু নারীরা শিক্ষা গ্রহণে তেমন আগ্রহ দেখায় না। বর্তমানে এখন নারীরা শিক্ষা ক্ষেত্রে অনেক এগিয়ে গেছে। যখন সকল ভেদাভেদ ভুলে সুশিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে উঠবে তখন আলোকিত সমাজ তৈরি হবে। তাই সকলের উচিত শিক্ষা গ্রহণ করা।

আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস কবে পালিত হয়

আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করা হয়ে থাকে। ১৯৬৭ সালে প্রথম আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস পালন করে। ১৯৬৫ সালের ৮ থেকে ১৯ সেপ্টেম্বর তেহরানে স্বাক্ষরতা সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ইউনেস্কো ১৯৬৬ সালের ২৬ অক্টোবর এই দিবসটি ঘোষণা করা হয়।প্রতি বছরের ৮ সেপ্টেম্বর কে আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস হিসেবে উদযাপন করা হয়ে থাকে।

ইউনেস্কোর সমীক্ষা অনুযায়ী বিশ্বে প্রায় ৭৫ কোটি মানুষ এখনো নিরক্ষর রয়েছে অর্থাৎ তারা এখনো স্বাক্ষর করতে পারে না। তাই যারা স্বাক্ষর করতে পারে না তাদের স্বাক্ষর শেখানোর জন্য এবং এই স্বাক্ষর সমাজের কাছে কতটুকু গুরুত্বপূর্ণ তা তুলে ধরা হয়। এছাড়াও বয়স্ক শিক্ষার গুরুত্ব কতটুকু তা বোঝানোর জন্য এই দিবসটি পালন হয়ে আসছে। বিশ্বের সাক্ষরতার হার বৃদ্ধি করার জন্য এই দিবস টি উদযাপন হয়।
বিশ্বে সাক্ষরতার দিক দিয়ে যে দেশগুলো এগিয়ে রয়েছে সেগুলো হচ্ছে উজবেকিস্তান, ইউক্রেন, লাটভিয়া। এর মধ্যে উজবেকিস্তান শতভাগ সাক্ষরতার একটি দেশ। যেখানে সাক্ষরতার হার ১০০%। এক্ষেত্রে কাতারের সাক্ষরতার হার উল্লেখ করার মতো। সেখানে সাক্ষরতার হার ৯৩.৪৬%। আবার উত্তর কোরিয়ায় সাক্ষরতার হার শতভাগ হিসেবে গণ্য করা হয়।

জাতীয় সাক্ষরতা দিবস কবে

সাক্ষরতা দিবস এতটাই গুরুত্বপূর্ণ যে, এই দিবসটি প্রতিবছর পালন করা হয়ে থাকে। কিন্তু এই দিবসটি সম্পর্কে অনেকের অজানা রয়েছে। তারা জানে না সাক্ষরতা দিবস কি এবং জাতীয় সাক্ষরতা দিবস কবে পালিত হয়। তাই যারা জানেন না জাতীয় সাক্ষরতা দিবস কবে, তারা আজকে জেনে নিন- জাতীয় সাক্ষরতা দিবস হচ্ছে প্রতি বছর সেপ্টেম্বর মাসের ৮ তারিখ। তাই সেপ্টেম্বরের ৮ তারিখ এই দিবসটি পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে পালিত হয়ে আসছে।
কিন্তু সাক্ষরতার হার পর্যালোচনা করলে দেখা যায় ৬০.৭% শিশু স্কুল শিক্ষা থেকে এখনো দূরে রয়েছে। শিশু শিক্ষার হার বলতে গেলে অনেক কম। এক্ষেত্রে ১২ কোটি ২০ লাখ শিশু শিক্ষা থেকে বঞ্চিত। বিশ্বে ৭০ কোটি নিরক্ষর রয়েছে। যার মধ্যে ৭৫% ই বাংলাদেশ, ব্রাজিল, পাকিস্তান ইত্যাদি দেশগুলোতে অবস্থিত।

আর্থিক সাক্ষরতা দিবস

আমরা অনেকেই জানিনা আর্থিক সাক্ষরতা দিবস কি এবং কবে পালিত হয়। আর্থিক বিষয়টি থেকে বোঝা যাচ্ছে, অর্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ক কিছু কর্মকান্ড এবং সেগুলো কিভাবে প্রয়োগ করতে হবে সে সম্পর্কে ধারণা দেয়। অর্থ উপার্জনের উপায় কি, সেই উপার্জিত টাকা খরচ করার উপায় কি এই বিষয়গুলো সম্পর্কে ধারণা থাকতে হবে। আর্থিক সাক্ষরতার জ্ঞান থাকলে একজন ব্যক্তি সহজে বুঝতে পারে কোন খাতে বিনিয়োগ করলে লাভ হবে, আর কোথায় বিনিয়োগ করলে ক্ষতি হবে। কারণ সেই ব্যক্তির সঞ্চয়পত্র, এফডিআর, বিভিন্ন ধরনের হিসাব সম্পর্কে ধারণা থাকে।
আবার যদি মূল্য স্থিতি দেখা যায় সেক্ষেত্রে ক্রয়ক্ষমতা পরিবর্তনের কারণও সে বুঝতে পারে। সুদ মানুষের ধন-সম্পদের উপর কিভাবে প্রভাব ফেলে এই সম্পর্কেও ধারণা থাকে। আর্থিক স্বাক্ষরতার মূল উদ্দেশ্য হলো অর্থনৈতিক পরিবেশ কি এই সম্পর্কে ধারণা দেওয়া। আর্থিক সাক্ষরতা দিবস বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান পালন করে থাকে।

সাক্ষরতা দিবস বাংলাদেশ

সাক্ষরতা দিবস সম্পর্কে আমরা উপরের আলোচনায় জেনেছি। বাংলাদেশে সাক্ষরতা দিবসকে অনেক গুরুত্ব দেওয়া হয়। এই সাক্ষরতা দিবসের মধ্য দিয়ে সাক্ষরতার হার বৃদ্ধি পায়। বাংলাদেশে ১৯৭২ সালে এই দিবসটি প্রথম পালন করা হয়। এখানে বয়স্ক শিক্ষার কথাও উল্লেখ করা হয়। প্রতিবছর ৮ সেপ্টেম্বর এই স্বাক্ষরতা দিবস পালন করা হয়। সাক্ষরতার হার দাঁড়িয়েছে ৭৬.৮%। ২০২২ সালে এই সাক্ষরতার হার অনেক কম ছিল। ২০২২ সালে সাক্ষরতার হার ৭৪.৬৬% ছিল। সে অনুযায়ী সাক্ষরতার হার অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে।

বিশ্ব সাক্ষরতা দিবস

শিক্ষার আলো সবার কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য ৮ সেপ্টেম্বর পালিত হয় এই দিবসটি ১০ বছর। শিক্ষা মানব জীবনে কতটা প্রয়োজন এবং শিক্ষা গ্রহণের অধিকার সবারই রয়েছে ইত্যাদি বিষয়গুলো বোঝানোর জন্য এই দিবসটি পালন করা হয়ে থাকে। নিরক্ষরতা দূর করে, সবার মাঝে শিক্ষার আলো জ্বালিয়ে দেওয়া হচ্ছে এর মূল লক্ষ্য। ইউনেস্কোর তথ্য অনুযায়ী, ৭৫ কোটি মানুষ এখনো সাক্ষরতার বাইরে রয়েছে। কিন্তু এই সাক্ষরতার হার বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই সাক্ষরতার হার যত বৃদ্ধি পাবে, একটা জাতি ততই উন্নতি লাভ করবে। আর এই বিশ্ব সাক্ষরতা দিবস সম্পর্কে উপরে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আশাকরি উপরের আলোচনা মাধ্যমে বিশ্ব সাক্ষরতা দিবস সম্পর্কে খুঁটিনাটি বিষয় জানতে পেরেছেন।

কোন সম্মেলন থেকে বিশ্ব সাক্ষরতা দিবস ঘোষিত হয়

বিশ্ব সাক্ষরতা দিবসের প্রধান কাজ হচ্ছে নিরক্ষর ব্যক্তিকে স্বাক্ষরতার আওতায় নিয়ে আসা। মানব জীবনে সাক্ষরতার গুরুত্ব কতটুকু রয়েছে তা বোঝানোর জন্য এ দিবসটি পালিত হয়। শিক্ষা গ্রহণের অধিকার সবারই রয়েছে। এই শিক্ষা গ্রহণের মাধ্যমে সে সুশিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে ওঠে। ফলে সমাজে উন্নয়ন সাধিত হয়। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, এই দিবসটা কখন এবং কোথায় ঘোষণা করা হয়েছিল? অবশ্য একটি সম্মেলনের মাধ্যমে দিবসটি ঘোষিত হয়। সম্মেলনটি হচ্ছে ইউনেস্কোর সাধারণ সম্মেলন, যা ১৯৬৬ সালের ২৬ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হয় এবং সে সময় এ দিবসটির ঘোষিত হয়।

আন্তর্জাতিক শিক্ষা দিবস কবে

প্রিয় পাঠক এবার আমরা জানবো আন্তর্জাতিক শিক্ষা কি এবং এই শিক্ষা দিবস কবে অনুষ্ঠিত হয় সেই সম্পর্কে। শিক্ষা মানুষের মৌলিক অধিকার। সুশিক্ষায় শিক্ষিত হলে জীবনে অনেক সফলতা অর্জন করা সম্ভব। শিক্ষা ছাড়া কোন জাতি উন্নতি লাভ করতে পারে না। প্রতিবছর ২৪ জানুয়ারি আন্তর্জাতিক শিক্ষা দিবস পালন করা হয়।

শেষ কথা

অবশেষে, শিক্ষা গ্রহণের ফলে একজন ব্যক্তি বুঝতে পারে কোনটি ভালো আর কোনটি মন্দ। আর এই শিক্ষা গ্রহণের মাধ্যমেই একজন মানুষ শিক্ষিত হয়ে ওঠে। আর সাক্ষরতার প্রধান শর্ত হচ্ছে শিক্ষিত গ্রহণ করা। কারণ শিক্ষা গ্রহণের মাধ্যমেই সে স্বাক্ষর করতে পারে। আর এই সাক্ষরতা দিবসের প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে সাক্ষরতার হার বাড়ানো। এবং এর ফলে সাক্ষরতার হার বৃদ্ধিও পাচ্ছে। তাই আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস পালনে বিভিন্ন রকম পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়।

আশা করি উপরের আলোচনার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস সম্পর্কে অনেক তথ্য জানতে পেরেছেন। তাই এই তথ্যগুলো অন্য জনকে জানানোর জন্য বেশি বেশি শেয়ার করুন। সুস্থ থাকুন, ভালো থাকুন। ধন্যবাদ
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url