বয়স বের করার সহজ পদ্ধতি গুলো কি কি সেই সম্পর্কে জেনে নিন


আসসালামু আলাইকুম। আজকে যে বিষয় নিয়ে আলোচনা করব সেটি হচ্ছে বয়স কিভাবে বের করতে হয়। আমরা এই বিষয়টি অনেকে জানি না। অর্থাৎ বয়স কিভাবে বের করতে হয় এটা আমরা অনেকে জানিনা। আবার অনেকে বিভিন্নভাবে বয়স বের করে থাকে।বিভিন্ন সময় বয়স বের করার প্রয়োজন দেখা যায়।
বয়স বের করার সহজ পদ্ধতি
যদি নিচের আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়েন, তাহলে এই বিষয়টি আপনার কাছে খুব সহজ হয়ে যাবে এবং আজকের পর থেকে আপনি সহজে বয়স বের করতে পারবেন। তাই চলুন জেনে নিন বয়স বের করার সহজ পদ্ধতি কি।

পেজ সূচিপত্রঃ বয়স বের করার সহজ পদ্ধতি

ভূমিকা

বয়স এমন একটি বিষয় যেটি দ্বারা একজন ব্যক্তির বার্ধক্যের অবস্থা বোঝা যায়। অর্থাৎ একজন ব্যক্তির বয়স জানলে বুঝা যায় সে ব্যক্তি যুবক নাকি বৃদ্ধ। একজন শিশুর যখন বয়স বাড়তে শুরু করে তখন সে যুবক হয় তারপর পর্যায়ক্রমে বৃদ্ধ হয়ে যায়। কিন্তু এই বয়স বিভিন্ন সময় হিসেব করার প্রয়োজনে তা দেখা দেয়। এমন কিছু অবস্থার সৃষ্টি হয় যেখানে বয়স বের করতে হয়। যেমন চাকরির ক্ষেত্রে বয়স বের করার প্রয়োজনীয়তা অনেক বেশি।

আবার শিক্ষা ক্ষেত্রেও বয়সের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। তাই বয়স এমন একটি বিষয় যেটি সর্বক্ষেত্রে প্রয়োজন হয়। আর এই বয়স যদি আমরা সঠিকভাবে বের করতে না পারি তাহলে বয়সের ক্ষেত্রে কম বেশি হয়ে যায়। তাই আমাদের জানতে হবে বয়স কিভাবে বের করতে হয়। সুতরাং এই আলোচনায় সহজেই বুঝতে পারবেন বয়স বের করার সহজ পদ্ধতি কি।

দিন মাস বছর বের করার নিয়ম

যখন বয়স বের করার প্রয়োজন হয়, তখন দিন, মাস, বছর দরকার হয়। যেমন: জন্ম নিবন্ধন, এনআইডি কার্ড ইত্যাদি ক্ষেত্রে সঠিক বয়স প্রয়োজন হয়। যদি আমাদের নিয়ম না জানা থাকে, তাহলে দিন,মাস, বছর বের করা যাবে না। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক কিভাবে দিন, মাস, বছর বের করতে হয়। এক্ষেত্রে বিভিন্ন নিয়ম রয়েছে সেগুলোর মধ্যে কয়েকটি নিয়ম আলোচনা করা হলো।
অর্থাৎ প্রথম নিয়মটি হচ্ছে, প্রথমে আপনাকে আপনার জন্ম সালের তারিখ থেকে বর্তমান সালের তারিখ বিয়োগ করতে হবে। তাহলে আপনার দিন মাস বছর বের হয়ে যাবে। যেমন:
২০২৩-০৯-২১
১৯৯৪-০৮-২০
……......….................
২৯-০১-০১
এভাবে বিয়োগ দিলে আপনার বয়স বের হয়ে যাবে। অর্থাৎ দিন,মাস, বছর খুব সহজে জানতে পারবেন। তাহলে এখানে আপনার বয়স হবে ২৯ বছর ০১ মাস ০১ দিন।
দিন মাস বছর বের করার নিয়ম


দ্বিতীয় পদ্ধতি হচ্ছে যখন আপনার জন্ম তারিখের দিন এবং মাস বড় হয়ে যায় তাহলে নিম্নের পদ্ধতি ব্যবহার করতে পারেন। উদাহরণস্বরুপ:
২০২৩-০৯-২১
১৯৯৩-১১-১৯
..........….......................
২৯-১০-০২
এখানে দেখা যাচ্ছে, ২৯ বছর ১০ মাস ২ দিন। অর্থাৎ এটি একটি ভিন্ন রকম বিয়োগ। কারণ এখানে একটু লক্ষ্য করবেন উপরে যে মাসের সংখ্যা রয়েছে সেটি নিচের যে মাসের সংখ্যা রয়েছে তার থেকে কম। এরকম পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে জন্মের সাল ১৯৯৩ থেকে ১ বছর (১২ মাস) ধার নিয়ে ০৯ এর সাথে যোগ করুন। এক্ষেত্রে যোগফল হবে ২১ মাস। এবার এই ২১ মাস থেকে ১১ মাস বাদ দিন। বাদ দিলে যে সংখ্যাটি হবে সেটি হচ্ছে ১০ মাস। তারপর যে এক বছর ধার নিয়েছিলেন সেটি আবার যোগ করে দিতে হবে। তারপর উপরের সংখ্যাটি থেকে নিচের সংখ্যা বিয়োগ করলে বছর বের হবে। এভাবে আপনি দিন, মাস, বছর বের করতে পারবেন।

বয়স বের করার নিয়ম

বয়স বের করার বিভিন্ন পদ্ধতি থাকলেও কিছু কিছু পদ্ধতি রয়েছে যেগুলো ব্যবহার করে খুব সহজে বয়স বের করা যায়। উপরের আলোচনায় দুটি ব্যতিক্রম ধর্মী সংখ্যার বয়স কিভাবে বের করতে হয় সেটা জেনেছি। এবার তাহলে জেনে নিন ওপরে যদি দিনের সংখ্যা কম থাকে তাহলে সেক্ষেত্রে কি করা উচিত। অর্থাৎ সেক্ষেত্রে কিভাবে বয়স বের করবেন। উদাহরণস্বরূপ:
ধরুন, আপনার জন্ম সাল ০৫-০৭-১৯৯৮ । তাহলে বর্তমানে আপনার বয়স কত হবে।
২০২৩-০৯-০৩
১৯৯৮-০৭-০৫
..............................
২৫-০১-২৮
এখানে বিয়োগ করার পদ্ধতি হচ্ছে উপরে যেহেতু দিনের সংখ্যা কম সেহেতু পাশ থেকে এক মাস ধার নিতে হবে। ৩০ দিন নিতে হবে। এখানে দিন ধরতে হবে কারণ আমরা দিনের হিসাব করছি তাই। তাহলে ০৩ এর সাথে ৩০ যোগ করলে ৩৩ দিন হবে। এবার এই ৩৩ দিন থেকে ৫ দিন বাদ দিতে হবে তাহলে বিয়োগফল হবে ২৮ দিন। আর যে এক মাস ধার নিয়েছিলেন সেটা আবার দিয়ে দিতে হবে। অর্থাৎ ওই এক মাস ওই মাসের সাথে যোগ করে দিতে হবে এবং উপরের সংখ্যা থেকে নিচের সংখ্যা বিয়োগ করে দিতে হবে, তাহলে মাস বের হবে এবং পর্যায়ক্রমে বছরের সংখ্যা বিয়োগ করলে বছর বের হবে। এই পদ্ধতি ব্যবহার করে আপনি অতি সহজে বয়স বের করতে পারবেন।

বয়স বের করার সূত্র

বয়স বের করার সূত্র বলতে এখানে বোঝানো হয়েছে যোগ বিয়োগ করার ক্ষেত্রে একটু হিসাব-নিকাশ সঠিকভাবে করতে হবে। আচ্ছা বিষয়টা পরিষ্কার করে বলি, যদি আপনার জন্ম তারিখ বর্তমান তারিখ থেকে বেশি হয় তাহলে বর্তমান তারিখের সাথে ৩০ দিন যোগ করার পর তারপর বিয়োগ করতে হবে। আবার যদি আপনার জন্মের মাস বর্তমান মাস থেকে বড় হয় তাহলে বর্তমান যে মাস রয়েছে তার সাথে ১২ মাস যোগ করতে হবে। অর্থাৎ বছরে যে সাল রয়েছে সেই সাল থেকে ১ বছর (১২ মাস) ধার নিতে হবে। আর সাল বিয়োগ করার সময় নিচের সাল থেকে যে ১ বছর ধার করা হয়েছে তা সেই সালের সাথে যোগ হয়ে যাবে। এভাবে যোগ-বিয়োগ করে খুব দ্রুত বয়স বের করতে পারবেন।

বয়স বের করার সহজ পদ্ধতি

বয়স বের করার জন্য উপরে অনেক পদ্ধতি আলোচনা করা হয়েছে। উপরে যে বয়স বের করার উপায়গুলো বা পদ্ধতি গুলো আলোচনা করা হয়েছে তা অনেক সহজ পদ্ধতি। এই পদ্ধতি গুলো ছাড়াও আরো একটি বয়স বের করার সহজ পদ্ধতি রয়েছে। যে পদ্ধতি এখন আলোচনা করা হবে। ধরুন আপনার জন্মতারিখ বর্তমান তারিখের চেয়ে বেশি। অর্থাৎ আপনার জন্ম তারিখের মাস, দিন এগুলো বর্তমান তারিখ থেকে বেশি। ধরুন আপনার জন্ম তারিখ ২৭-১১-১৯৯৯। তাহলে আপনার বয়স কত হবে?
২০২৩-০৮-১৮
১৯৯৯-১১-২৭
………….............…...
২৩-০৮-২১
এখানে একটু লক্ষ্য করুন, জন্ম তারিখের দিন এবং মাস উভয়েই উপরের তারিখ থেকে বেশি। এক্ষেত্রে একটি কাজ করতে হবে, দিনের যে সংখ্যাটি রয়েছে অর্থাৎ ১৮, তার সাথে নিচে যে ১১ মাস রয়েছে এখান থেকে ১ মাস অর্থাৎ ৩০ দিন ধার নিয়ে ১৮ এর সাথে যোগ করতে হবে। তাহলে যোগফল হবে ৪৮। এবার এই ৪৮ থেকে ২৭ বাদ দিতে হবে। তাহলে বিয়োগফল হবে ২১। এভাবে মাসের যে সংখ্যা রয়েছে সেখানে বছর থেকে ১ বছর অর্থাৎ ১২ মাস নিয়ে ৮ এর সাথে যোগ করতে হবে। যোগফল হবে ২০। এই ২০ থেকে ১১ বাদ দিতে হবে। বাদ দেওয়ার পর ফলাফল হবে ০৮ মাস। এরপর ওই ১ বছর আবার জন্ম তারিখের বছরের যে সাল রয়েছে, সেই সালের সাথে যোগ করে দিতে হবে। তারপর বিয়োগ করে নিন। তাহলে আপনি আপনার জন্ম তারিখ খুব সহজ এবং দ্রুততার সাথে বের করতে পারবেন। সুতরাং এবার আপনি জেনে গেলেন, বয়স বের করার সহজ পদ্ধতি কি কি হতে পারে।

চাকরির বয়স বের করার নিয়ম

বিভিন্ন চাকরির ক্ষেত্রে সঠিক বয়স বের করা প্রয়োজন হয়। কেননা চাকরির বিজ্ঞপ্তিতে বয়স চেয়ে থাকে। তাই এই বয়স বের করার জন্য আমরা এখানে দুটো পদ্ধতি আলোচনা করব। আপনি ওয়েব ব্রাউজার থেকে বয়স চিনে নিতে পারবেন অথবা অ্যাপস এর মাধ্যমে বয়স বের করা যায়। প্রথমে অ্যাপসের মাধ্যমে বয়স বের করার নিয়ম জানুন। এর জন্য প্রথমে Google play store এ গিয়ে Age Calculator লিখে সার্চ দিলে অনেক বয়স বের করার অ্যাপস চলে আসবে। এর মধ্য থেকে যেকোন একটি ইনস্টল করে নিন। ইন্সটল করা শেষ হয়ে গেলে অ্যাপসটি ওপেন করুন। এখানে দুইটা বক্স আসবে। একটি বক্সে আপনার জন্ম তারিখ দিবেন আর অন্য বক্সে চাকরির বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখিত বয়স দিয়ে দিতে হবে। এভাবে আপনি সহজে চাকরির বয়স বের করতে পারবেন।
আর ব্রাউজারে গিয়ে বয়স বের করতে পারেন। এজন্য google ব্রাউজারে গিয়ে Age ক্যালকুলেটর লিখে সার্চ দিলে অনেক লিংক চলে আসবে। যেকোনো একটি লিংক এর উপর ক্লিক করলে বয়স বের করার ক্যালকুলেটর চলে আসবে। এখানেও দুইটি বক্স আসবে, একটিতে আপনার জন্ম তারিখ আর অন্যটিতে চাকরির বিজ্ঞপ্তিতে যে বয়স উল্লেখ করা থাকে সে বয়স দিয়ে দিতে হবে। তাহলে আপনার বয়স বের হয়ে যাবে। আশা করি কিভাবে চাকরির বয়স বের করতে হবে তা সহজে বুঝতে পেরেছেন।

বয়স বের করার ক্যালকুলেটর

ক্যালকুলেটরের সাহায্যে বয়স বের করা যায়। অনেক সময় দেখা যায়, দিন, মাস, বছর এমনকি মিনিট, সেকেন্ড, ঘন্টাও বের করার চেষ্টা করে। কিন্তু মিনিট, সেকেন্ড, ঘন্টা এগুলো বের করা সম্ভব এই ক্যালকুলেটরের সাহায্যে। এর জন্য আপনাকে একটি অ্যাপস ডাউনলোড করতে হবে। উপরের আলোচনায় বিস্তারিত বলা হয়েছে, কিভাবে অ্যাপস ডাউনলোড করতে হবে এবং ইনস্টল করতে হবে। এখানেও দুটি বক্স দেখা যাবে। একটি বক্সে জন্ম তারিখ অন্য বক্সে বর্তমান তারিখ দিতে হবে। এভাবে আপনি বয়সের সাথে সাথে মিনিট, সেকেন্ড, ঘন্টাও বের করতে পারবেন।

বয়স বের করার সফটওয়্যার

বয়স বের করার ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের সফটওয়্যার রয়েছে। এই সফটওয়্যার গুলো ব্যবহার করে অতি দ্রুত বয়স বের করা যায়। এই সফটওয়্যার গুলোর মধ্যে Age Calculator নামে একটি সফটওয়্যার রয়েছে। এই সফটওয়্যার ব্যবহার করে বয়স বের করতে পারবেন। এই সফটওয়্যার ডাউনলোড করার জন্য Google play store-এ গিয়ে সহজে ডাউনলোড করতে পারবেন। সেখানে গিয়ে শুধু সার্চ বক্সে লিখতে হবে Age Calculator । তাহলে বয়স বের করার অনেক সফটওয়্যার চলে আসবে। যেকোনো একটি আপনি ব্যবহার করতে পারেন। তাহলে আমরা জেনে গেলাম বয়স বের করার সফটওয়্যার কি রয়েছে।

লেখকের মন্তব্য বা শেষ কথা

অবশেষে, এই বয়স বের করার জন্য আপনি অনলাইন কিংবা অফলাইন দুটোই ব্যবহার করতে পারেন। অবশ্য যারা বয়স বের করতে পারেন না, এই পোস্টটি পড়ার পর আপনি অবশ্যই তা বের করতে পারবেন। আগে যাদের কাছে বিষয়টি কঠিন মনে হচ্ছিল, এখন আশা করি তাদের কাছে বিষয়টি সহজ হয়ে গেছে।

আর এই আর্টিকেলে বয়স বের করার সহজ পদ্ধতি কি কি রয়েছে সেগুলো সব বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আশা করি বুঝতে পোস্টটি পড়ে আপনি উপকৃত হয়েছেন। আপনি উপকৃত হলে আমার কষ্ট সার্থক হবে। আর অবশ্যই শেয়ার করতে ভুলবেন না। সুস্থ থাকুন, ভালো থাকুন। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url