গ্যাসের সমস্যা দূর করার ঘরোয়া উপায়-অতিরিক্ত গ্যাস হলে কি করনীয়



আসসালামু আলাইকুম। আজকের যে বিষয় নির্ধারণ করা হয়েছে সেটি বর্তমান সময়ে অনেক পরিচিত একটি বিষয়।আজকের মূল উপজীব্য বিষয় হচ্ছে গ্যাসের সমস্যাকে কেন্দ্র করে। গ্যাস্ট্রিকের নাম আপনারা অনেকেই শুনেছেন এবং এই সম্পর্কে অনেকেই অবগত রয়েছেন। প্রায় মানুষের এই সমস্যা রয়েছে।
গ্যাসের সমস্যা দূর করার ঘরোয়া উপায়
কিন্তু এই গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা এখন বড় আকার রূপ নিয়েছে। এই গ্যাসের সমস্যা থাকলে বিভিন্ন রকম সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। কিন্তু এই সমস্যা দূর করার জন্য আমরা বিভিন্ন ধরনের ওষুধ খেয়ে থাকি। তাই আজকে এই গ্যাসের সমস্যা দূর করার ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে জেনে নিব।

পেজ সূচিপত্রঃ গ্যাসের সমস্যা দূর করার ঘরোয়া উপায়-অতিরিক্ত গ্যাস হলে কি করনীয়

ভূমিকা

গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা একটি বড় সমস্যা। প্রায় মানুষই গ্যাসের সমস্যায় ভুগে থাকেন। গ্যাস যখন শুরু হয় তখন অস্বস্তিকর মনে হয়। যার গ্যাস আছে শুধু সেই এর জ্বালা বুঝে। বিভিন্ন ধরনের ভাজা পোড়া এমন কি অধিক পরিমান মসলা যুক্ত খাবার খেলেও এই সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। তখন বুক জ্বালাপোড়া সহ আরো অন্যান্য লক্ষণগুলো প্রকাশ পায়। যখন গ্যাসের সমস্যা দেখা দেয় তখন আমরা বিভিন্ন ধরনের ওষুধ খাবার জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়ি। ওষুধ ছাড়া কিভাবে ঘরোয়া পদ্ধতিতে গ্যাসের সমস্যা সমাধান করা যায় সে সম্পর্কে আলোচনা করব। তাই গ্যাসের সমস্যা দূর করার ঘরোয়া উপায় গুলো কি কি তা জানার জন্য শেষ পর্যন্ত আমাদের সঙ্গে থাকুন।

দ্রুত পেটের গ্যাস কমানোর উপায়

গ্যাস নেই এমন লোক খুঁজে পাওয়া দুরহ ব্যাপার। আর যখন গ্যাস হয়, তখন আমরা গ্যাস কমানোর জন্য বিভিন্ন ধরনের ওষুধ সেবনে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। তারপরেও গ্যাস দ্রুত কমে না। এই গ্যাস দ্রুত কমানোর জন্য কিছু উপায় রয়েছে। যেমন:
  1. যখন গ্যাস হয় তখন ঘরের মধ্যে হাঁটাহাঁটি করুন। তাহলে দ্রুত গ্যাস কমে যাবে।
  2. গ্যাস কমানোর আরেকটি উপায় হচ্ছে ব্যায়াম করা। দড়ি লাফ।
  3. পানির সাথে বিট লবণ মিশ্রিত করে খেলে দ্রুত গ্যাসর সমস্যা দূর হয়।
  4. বিভিন্ন ধরনের চা খাওয়ার ফলে গ্যাসের ব্যথা দূর হয়।
  5. যখন গ্যাস হয় তখন ডাবের পানি খেতে পারেন। এতে ভালো ফলাফল পাওয়া যায়।
  6. গ্যাসের সমস্যা হলে দই খুব কার্যকরী একটি উপাদান। কারণ দই হজম শক্তি বৃদ্ধি করে।
  7. দ্রুত গ্যাসের সমস্যা দূর করতে মৌরি অত্যন্ত কার্যকরী ভূমিকা রাখে।
  8. আদা দ্রুত গ্যাস দূর করার ক্ষেত্রে বেশ উপকারী।

পেটের গ্যাস

পেটের গ্যাস কমানোর ঔষধ

গ্যাস কমানোর বিভিন্ন ধরনের ঔষধ পাওয়া যায়।এই ঔষধগুলো আমরা গ্যাস কমানোর জন্য খেয়ে থাকি।চলুন আমরা দেখে নিই কি কি ঔষধ রয়েছে।
  • Sergel 40
  • Rabe 20
  • Acifix
  • Xorel 20
  • Pantonix 20
  • Antacid
  • Esomeprazol 20
  • Omeprazol 20
  • Maxpro
  • Finix
  • Omep
  • Seclo
  • Losectil
  • Aspra
উপরোক্ত ঔষধগুলো ছাড়াও আরো বিভিন্ন ধরনের ঔষধ খেয়ে থাকি। এই ঔষধগুলোর মাধ্যমে আমরা গ্যাস কমানোর পদক্ষেপ নিই।

পেটের গ্যাস বের করার উপায়

যখন গ্যাসের সমস্যা দেখা দেয়, তখন একটি অস্বস্তিকর ভাব হয়। বুক জ্বালাপোড়া সহ পেট ফেঁপে যেতেও পারে। তখন এই গ্যাস বের করার জন্য আমরা ওষুধ ব্যবহার করি। কিন্তু পেটের গ্যাস বের করার কিছু প্রাকৃতিক উপায় রয়েছে। যেগুলো অনুসরণ করার মাধ্যমে ভালো ফলাফল পাওয়া যায়।

কলা খেলেও গ্যাস ভালো হয়। কারণ কলা সোডিয়াম কমিয়ে দেয় এবং গ্যাস ভালো হয়। যখন গ্যাস হয় তখন যদি হাঁটাহাঁটি করা হয় সেক্ষেত্রে গ্যাস অনেকাংশে কমে যায়। গ্যাস কমানোর আরও একটি উপায় হচ্ছে যোগব্যায়াম করতে হবে। বিভিন্ন ধরনের ব্যায়াম এর মাধ্যমে গ্যাস দূর করা সম্ভব। 
সকালে লেবু পানি খেলে গ্যাসের ক্ষেত্রে অত্যন্ত উপকার পাওয়া যায়। গ্যাস কমানোর একটি অত্যন্ত কার্যকরী পদ্ধতি হচ্ছে মেসেজ করা। তবে এই মেসেজ খুব সাবধানতার সাথে করতে হবে। তাই উপরোক্ত পদ্ধতিগুলো যদি সঠিকভাবে পালন করা হয় তাহলে পেটের গ্যাস দ্রুত বের হবে বা কমে যাবে।

চিরতরে গ্যাস দূর করার উপায়

সবাই চাই গ্যাস চিরতরে চলে যাক। সবাই এই গ্যাসের হাত থেকে মুক্তি পেতে চাই। কিন্তু ওষুধ খেলে গ্যাস চিরতরে ভালো হওয়ার সম্ভাবনা খুব কম। এই ওষুধ ছাড়াই কিভাবে গ্যাস দূর করা যায় চলুন সেই উপায় গুলো সম্পর্কে জেনে নিই।
  1. শসা খেলে পেট ঠান্ডা থাকে। যার ফলে গ্যাস অনেকাংশে কমে যায়।
  2. পেঁপে খাওয়ার মাধ্যমে গ্যাস দূর করা যায়।
  3. গ্যাস দূর করার আরেকটি উপায় হচ্ছে রসুন খাওয়া।
  4. আমরা অনেকেই গোল মরিচ এর নাম শুনেছি। যা গ্যাস দূর করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
  5. এক্ষেত্রে গ্যাসের সমস্যা দূর করার জন্য হলুদ ব্যবহার করা যেতে পারে।
  6. আনারস খেলে পরিপাকতন্ত্র ভালো থাকে। এবং গ্যাসের সমস্যা দূর হয়।
তাই গ্যাস থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য এই প্রাকৃতিক উপায় গুলো বা ঘরোয়া উপায় গুলো ব্যবহার করতে পারেন।
গ্যাস

গ্যাসের সমস্যা দূর করার ঘরোয়া উপায়

এই গ্যাস দূর করার জন্য বিভিন্ন ঘরোয়া উপায় রয়েছে। ঔষধ ছাড়া এই ঘরোয়া উপায় গুলো ব্যবহার করে আমরা গ্যাসের সমস্যার সমাধান করতে পারি। যেমন:
  1. জিরা পানি গ্যাস দূর করার জন্য সর্বাপেক্ষা উত্তম ঘরোয়া পদ্ধতি।
  2. গ্যাস দূর করার আরেকটি ঘরোয়া উপাদান হচ্ছে বেকিং পাউডার এবং চুনের রস।
  3. গোলমরিচ চা পান করার মাধ্যমেও গ্যাস কমে যায়। কারণ এটি হজমে ভূমিকা রাখে।
  4. লবঙ্গ তেল গ্যাসের সমস্যায় খুবই উপকারী।
  5. মেনথল গ্যাস দূর করার ক্ষেত্রে একটি সহায়ক উপাদান। চায়ের সঙ্গে খেতে পারেন।
  6. গ্যাস দূর করার জন্য পুদিনা পাতা পানিতে ফুটিয়ে সেই পানি খেতে পারেন।
  7. এলাচ গুঁড়ো গ্যাস দূর করার ক্ষেত্রে অত্যন্ত কার্যকরী।

অতিরিক্ত গ্যাস হলে কি করনীয়

যখন গ্যাস অতিরিক্ত হয়ে যায় তখন নিম্নোক্ত কাজগুলো করতে পারেন। তাহলে আপনার কিছুটা হলেও গ্যাস কমে যাবে।
  1. অতিরিক্ত গ্যাস হলে কোন ধূমপান করা যাবে না।
  2. যখন গ্যাসের মাত্রা বেশি হয়ে যাবে তখন পানি পান করুন।
  3. অতিরিক্ত গ্যাস হলে জোয়ান খেতে পারেন। তাহলে অনেক উপকার পাবেন।
  4. অতিরিক্ত গ্যাস হলে ডাল খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
  5. গ্যাসের সময় ঝাল যুক্ত খাবার না খাওয়াই ভালো।
তাই যদি গ্যাস অতিরিক্ত হয়ে থাকে তাহলে উপরোক্ত বিষয়গুলো বিশেষভাবে বিবেচনায় রাখতে হবে। এবং উপরোক্ত কাজগুলো কখনোই করা যাবে না।

সকালে কি খেলে গ্যাস হবে না

কিছু কিছু খাবার আছে যেগুলো সকালে খেলে গ্যাস হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না। আবার এমন কিছু আছে যেগুলো খেলে গ্যাস হয়। তাই সকালে খালি পেটে নিম্নোক্ত জিনিস গুলো খেতে পারেন।
  1. সকালে পেঁপে খেলে সেরকম সমস্যা হয় না। বরং এটি পেটকে পরিষ্কার রাখে। এমনকি এটি ওজন কমাতেও সাহায্য করে।
  2. খেজুর খেতে পারেন। খেজুর খেলে হজম ক্রিয়া বাড়ে। যার ফলে কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো রোগ ভালো হয়
  3. সকালে ডিম খেলে তেমন কোন গ্যাসের সমস্যা হয় না।
  4. সকালে কাঁচা ছোলা খেলে গ্যাস হওয়ার সম্ভাবনা কম। ছোলাই ফাইবার থাকার কারণে গ্যাস ও কোষ্ঠকাঠিন্য রোগ ভালো হয়।
  5. সকালে কলা খেলে গ্যাস হয় না। তাই সকালের নাস্তায় কলা খেতে পারেন।

গ্যাস্ট্রিক হলে কি কি খাওয়া যাবে না

দেখা যায় অনেক সময় গ্যাস হলে আমরা যেকোনো ধরনের খাবার খেয়ে থাকি। আসলে এটি না জানার কারণে হয়ে থাকে। তাই গ্যাস্ট্রিক হলে এমন কিছু জিনিস রয়েছে যা খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।যেমন:
  1. গ্যাস্ট্রিক হলে তেলে ভাজা পড়াটা খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
  2. গ্যাস্ট্রিক হলে মূলা না খাওয়া।
  3. গ্যাস্ট্রিক হলে লিচু খাওয়া থেকে দূরে থাকুন।
  4. চর্বি জাতীয় খাবার খাওয়া যাবে না।
  5. গ্যাস্ট্রিক হলে ভাজা পোড়া খাওয়া পরিহার করতে হবে।
  6. গ্যাস্ট্রিক হলে পাতাকপি, বাঁধাকপি এগুলো না খাওয়াই ভালো।
তাই গ্যাস্ট্রিক রোগীদের উপরোক্ত খাবার গুলো কখনো খাওয়া উচিত হবে না। এগুলো খেলে গ্যাসের সমস্যা আরো বেড়ে যেতে পারে। তাই এগুলো বিষয়ে সতর্ক থাকব।

পেটে গ্যাস হলে কি কি সমস্যা হয়

সাধারণত গ্যাস হয়ে থাকলে বিভিন্ন রকম সমস্যা দেখা দেয়। এক সময় এই সমস্যাগুলো জটিল রুপ নেয়। এমনকি অনেক বড় ধরনের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। গ্যাস হলে বুক জ্বালাপোড়া সহ পেট ফেঁপে যায়। পেটে অনেক ব্যথা শুরু হয়ে যায়। এমনকি অনেকের বমি হয়ে থাকে। এগুলো ছাড়াও আরও বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হয়।

শেষ কথা

অবশেষে, উপরোক্ত আলোচনার মাধ্যমে আমরা বুঝতে পারলাম যে, গ্যাসের সমস্যা দূর করার ঘরোয়া উপায় গুলো কি কি এবং অতিরিক্ত গ্যাস হলে কি করনীয় রয়েছে। আরো জানলাম গ্যাস হলে কি কি সমস্যা হতে পারে এবং গ্যাস হলে কি কি খাওয়া যাবে আর কি কি খাওয়া যাবেনা এটাও জানতে পারলাম।

আশা করি গ্যাস্ট্রিক সম্পর্কে সকল তথ্য জানতে পেরেছেন। তাই আপনি জানার সাথে সাথে অন্যজনকে জানার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য বেশি বেশি শেয়ার করে দিন। তাহলে অন্যজন আর্টিকেলটি পড়ে উপকৃত হবে। সুস্থ থাকুন, ভালো থাকুন। ধন্যবাদ
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url