আপনি কি জানেন বিশ্ব শান্তি দিবস কবে উদযাপিত হয়-শান্তি প্রতিষ্ঠা কি


আসসালামু আলাইকুম। আজকে যে বিষয় নিয়ে আলোচনা করব সেটি হচ্ছে বিশ্ব শান্তি দিবস নিয়ে। শান্তি দিবস সম্পর্কে অনেকের জানা নেই। আবার অনেকের এ সম্পর্কে কিছু ধারনা রয়েছে। এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনি বিশ্ব শান্তি দিবস সম্পর্কে সকল তথ্য জানতে পারবেন। 
বিশ্ব শান্তি দিবস কবে উদযাপিত হয়
তাই যাদের ধারণা নেই তারা অবশ্যই গুরুত্ব সহকারে আর্টিকেলটি পড়বেন। আর যাদের ধারণা রয়েছে তারাও পড়বেন। কারণ জানার কোন শেষ নেই এর মাধ্যমে নতুন কিছু জানতে পারবেন। তাই চলুন জেনে নিন বিশ্ব শান্তি দিবস কবে উদযাপিত হয় এবং শান্তি প্রতিষ্ঠা কি ইত্যাদি সম্পর্কে।

পেজ সূচিপত্রঃ বিশ্ব শান্তি দিবস কবে উদযাপিত হয়-শান্তি প্রতিষ্ঠা কি

ভূমিকা

শান্তি কিভাবে প্রতিষ্ঠা করা যায় এটি হচ্ছে এর মূল উদ্দেশ্য। অর্থাৎ বিশ্বের যুদ্ধ, হানাহানি ইত্যাদি দূর করে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা। সকল প্রকার ভেদাভেদ ভুলে একে অপরের প্রতি ভালোবাসা দেখাতে হবে। সকল প্রকার যুদ্ধ- বর্ণবাদ, ধনী-গরীব ভেদাভেদ না করে সকলের প্রতি সম্প্রীতি দেখানো উচিত। তাই শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য প্রতিবছর ২১ সেপ্টেম্বর এই দিবসটি পালন করা হয়। বিশ্বে যদি শান্তি না থাকে তাহলে অনেক সমস্যার সৃষ্টি হয়। তাই বিশ্বে শান্তির প্রয়োজনীয়তা বা গুরুত্ব কতটুকু রয়েছে সেই বিষয়টি এই দিবসটি পালনের মাধ্যমে বেশি বেশি মনে পড়ে। কিন্তু শান্তি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে আমরা সফলতা বয়ে আনতে পারছি না। তাই বিশ্বব্যাপী যদি শান্তি বজায় থাকে, তাহলে সুখে শান্তিতে সবাই একসঙ্গে বসবাস করতে পারে। তবে এ ক্ষেত্রে বর্ণবাদ, অসমতা, দারিদ্র ইত্যাদি বিষয়গুলো শান্তি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। তাই এই বিষয়গুলো ভুলে গিয়ে সবার প্রতি ভালোবাসা দেখানোর মাধ্যমে শান্তি বজায় রাখা যায়।

বিশ্ব শান্তি পরিষদ কবে প্রতিষ্ঠিত হয়

বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠা করার জন্য বিশ্ব শান্তি পরিষদ গঠন করা হয়। আবার শান্তি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের সংস্থা ভূমিকা রাখে। যেমন ওআইসি, সার্ক, জাতিসংঘ ইত্যাদি। এই সংস্থাগুলো বিভিন্ন রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে শান্তি বজায় রাখা এর মূল উদ্দেশ্য। তবে বিশ্ব শান্তি পরিষদকে গণতান্ত্রিক, জোট নিরপেক্ষ আন্দোলন হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়ে থাকে। বিশ্ব শান্তি পরিষদ ১৯৪৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। তাই সব জায়গায় শান্তি বজায় রাখা সকলের একান্ত কর্তব্য। একে অপরের সাথে যুদ্ধে না জড়িয়ে পরস্পরের প্রতি সহানুভূতিশীলতা দেখাতে হবে। তাহলেই এই বিশ্ব শান্তিময় হয়ে উঠ।

বিশ্ব শান্তি দিবস কবে উদযাপিত হয়

প্রিয় পাঠক এ পর্যায়ে আমরা জানবো বিশ্ব শান্তি দিবস কবে পালিত হয়। জাতিসংঘ এই দিবসটি ঘোষণা করে। প্রতি বছরের ২১ সেপ্টেম্বর পালন করা হয়ে থাকে। এই দিনটি পালন করার উদ্দেশ্য হচ্ছে একে অন্যের প্রতি সম্প্রীতি, ভালোবাসা, সৌহার্দ্যপূর্ণ আচরণ ইত্যাদি বিষয়গুলো বজায় রাখা। সকল দেশ এই দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করে থাকে। তাই বলা যায় এই দিবসটির মূল লক্ষ্য হচ্ছে সকল রাষ্ট্রের মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা। তাই সুন্দরভাবে বেঁচে থাকতে গেলে শান্তি অবশ্যই প্রয়োজন। সুতরাং আমরা জানলাম বিশ্ব শান্তি দিবস কবে উদযাপিত হয়।

বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় জাতিসংঘের ভূমিকা

জাতিসংঘ বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় বিশেষ অবদান রাখে। ১৯৪৫ সালে জাতিসংঘ গঠিত হয়। সবার প্রত্যাশা ছিল বিশ্ব শান্তির প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে জাতিসংঘ কাজ করবে এবং সবার মধ্যে ভেদাভেদ দূর করে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক তৈরি করবে। কিন্তু আসলেই জাতিসংঘ বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য বিভিন্ন রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে হানাহানি যুদ্ধ দূর করে শান্তি বজায় রাখার ক্ষেত্রে অনেক সচেষ্ট রয়েছে। যে দেশগুলো নিজেদের স্বাধীনতা বা ভূখণ্ড রক্ষার জন্য যুদ্ধ করে জাতিসংঘ সেই দেশগুলোকে সাহায্য করে থাকে। প্রতিটি মানুষ যেন তার মৌলিক অধিকার ফিরে পায় সেজন্য জাতিসংঘ কাজ করে। জাতিসংঘের সবচেয়ে বড় অর্জন হচ্ছে শান্তি রক্ষা মিশন। যে দেশগুলো যুদ্ধের কারণে প্রায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে সেই দেশগুলোকে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের মাধ্যমে সাহায্য করে। 
এক্ষেত্রে বলা বাহুল্য, শান্তি রক্ষী বাহিনী এক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রাখে। বাংলাদেশেও শান্তিরক্ষায় সবসময় সচেষ্ট থাকে। এক্ষেত্রে জাতিসংঘ প্রতিষ্ঠা হয়েছে কিন্তু বিশ্ব থেকে এখনো যুদ্ধ, হানাহানি দূর হয়নি। তবে জাতিসংঘ গঠনমূলক ভূমিকা রাখবে এটাই সবার প্রত্যাশা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তী সময়ে বিশ্ব থেকে সকল প্রকার অশান্তির, যুদ্ধ দূর করতে মূলত জাতিসংঘ গঠিত হয়। উপরে আলোচনায় আমরা এতটুকু জানতে পারলাম যে, বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে জাতিসংঘের ভূমিকা কতটুকু রয়েছে। উপরোক্ত ভূমিকা গুলো ছাড়াও জাতিসংঘ আরো বিভিন্ন ধরনের ভূমিকা পালন করে থাকে।

বিশ্ব শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষায় জাতিসংঘের ভূমিকা

জাতিসংঘ বিশ্ব শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষায় উভয় ক্ষেত্রেই বিশেষ ভূমিকা রাখে। জাতিসংঘ বিশ্ব শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষায় বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে। জাতিসংঘ বিশ্বব্যাপী শান্তি বজায় রাখা এবং নিরাপত্তা রক্ষার্থে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞাও দিতে পারে। আবার শান্তি বজায় রাখার জন্য বিভিন্ন দেশের মধ্যে যুদ্ধ বিগ্রহ দূর করা, পরস্পরের মাঝে সহযোগিতার মনোভাব গড়ে তোলা ইত্যাদি কাজগুলো করে। শান্তিরক্ষা বাহিনীর দ্বারা জাতিসংঘ নিরাপত্তা রক্ষা করে থাকে। শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষায় বাংলাদেশও তার শান্তিরক্ষী বাহিনী দ্বারা কাজ করে থাকে। বিশ্ব শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষায় জাতিসংঘ শান্তি রক্ষী বাহিনী প্রেরণ করে থাকে।

শান্তি প্রতিষ্ঠা কি

শান্তি বলতে বোঝাই যুদ্ধ-বিগ্রহ বা হানাহানি বিহীন একটা সময়। যেখানে কোন প্রকার কলহ ছাড়াই মানুষ শান্তিতে বসবাস করতে পারে। যদি শান্তি বিরাজ না করে তাহলে বিশ্ব ভালো থাকতে পারে না। তাই ভালো থাকতে হলে বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে হবে। শান্তি প্রতিষ্ঠা হচ্ছে যুদ্ধবিগ্রহ ঘটার আগেই সেটি প্রতিরোধ করার একটা ব্যবস্থা গ্রহণ করা। যদি প্রতিরোধ করা যায় তাহলে অশান্তির সৃষ্টি হবে না। তাই বিশ্বব্যাপী শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য বিশ্ব শান্তি দিবস পালিত হয়। আর সবার মধ্যে পারস্পরিক সুসম্পর্ক তৈরি করার উদ্দেশ্যে বিশ্ব শান্তি দিবস পালন করা হয়ে থাকে। তাই সবারই উচিত শান্তি প্রতিষ্ঠায় অবদান রাখা।

বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশের অবদান

বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশের অনন্য অবদান রয়েছে। অর্থাৎ বাংলাদেশ বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় অনেক সাহায্য করে। বিভিন্ন শান্তি রক্ষা মিশনে বাংলাদেশ শান্তিরক্ষী দিয়ে থাকে। ১৯৮৮ সালে বাংলাদেশ প্রথম শান্তিরক্ষা মিশনে অংশ নেয়। তারপর থেকে বাংলাদেশের মিশন শুরু হয়ে যায়। যত দিন যাচ্ছে ততই শান্তি প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশ অনেক সফলকাম হচ্ছে। তবে পুলিশ, নৌবাহিনী, বিমান বাহিনী বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় বিশেষ অবদান রাখছে। ১৯৮৯ সালে পুলিশ প্রথম শান্তিরক্ষা মিশনে পা রাখেন। শান্তি প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশ সর্বোচ্চ শান্তিরক্ষী পাঠিয়ে থাকে। এই সকল ক্ষেত্র ছাড়াও আরো বিভিন্ন ধরনের পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ শান্তি প্রতিষ্ঠায় কাজ করে থাকে।

শান্তি আন্দোলন কি

শান্তি আন্দোলন বলতে বোঝানো হয় সামাজিক আন্দোলন। অর্থাৎ যখন কোন যুদ্ধ হয়, সেই যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটলে শান্তিপূর্ণ অবস্থা অর্জন করা। পরস্পরের মধ্যে সংঘর্ষ দূর করা এবং শান্তি বজায় রাখা। এই শান্তি বজায় রাখার ক্ষেত্রে সকলকে এগিয়ে আসতে হবে। কারো পক্ষে একা শান্তি প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নয়। পরবর্তীতে তখন ১৯৪৯-৫০ সালে বিশ্ব শান্তি পরিষদ গঠিত হয়েছে। শান্তি আন্দোলনের মুখ্য উদ্দেশ্য হচ্ছে একে অন্যের প্রতি হিংস্র মনোভাব করা থেকে দূরে থাকা। এই শান্তি আন্দোলন কখনো সাম্রাজ্যবাদী, পরিবেশবাদী বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে। তাই শান্তি আন্দোলন হচ্ছে শান্তি বিষয়ক আন্দোলন বোঝায়, যেখানে সকলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত থাকবে। শান্তি আন্দোলন ব্যক্তি, সমাজ এমনকি রাষ্ট্র কেন্দ্রিক হতে পারে।

শেষ কথা

অবশেষে, বিশ্ব শান্তি দিবস পালিত হয় বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠা করার জন্য। আর বিশ্বে যদি শান্তি বজায় না থাকে তাহলে হিংসা-বিদ্বেষ, যুদ্ধ, হানাহানি ইত্যাদি লেগেই থাকবে। তাই শান্তি রক্ষার্থে সবাইকে এগিয়ে আসা উচিত। তাই উপরের আলোচনার মাধ্যমে আমরা জানতে পারলাম, বিশ্ব শান্তি দিবস কবে উদযাপিত হয় এবং শান্তি রক্ষার্থে জাতিসংঘের ভূমিকা কি।

উপরের পোস্টটি যদি আপনার উপকারে আসে তাহলে অবশ্যই বেশি বেশি শেয়ার করে দিন এবং নতুন নতুন তথ্য পেতে এই ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ভিজিট করুন। সুস্থ থাকুন, ভালো থাকুন। পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url