লিচুর উপকারিতা ও অপকারিতা-লিচুতে কোন এসিড থাকে জেনে নিন

আসসালামু আলাইকুম। আজকের আলোচনার বিষয় হচ্ছে লিচুর উপকারিতা ও অপকারিতা নিয়ে। অনেকেই শিরোনাম দেখে এড়িয়ে যাবে। কিন্তু আপনি কি জানেন লিচুর উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে? অনেকেরই জানা নেই এই বিষয়টি। এর পাশাপাশি আরও জানব লিচুতে কোন এসিড থাকে কিনা সেই বিষয়ে।
লিচুর উপকারিতা ও অপকারিতা-লিচুতে কোন এসিড থাকে
তাই যাদের এই বিষয় সম্পর্কে জানা নেই তাদের জন্য এ আর্টিকেল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। লিচুর উপকারিতা ও অপকারিতা জানতে হলে এই আর্টিকেল সম্পন্ন করতে হবে। তাই চলুন কথা না বাড়িয়ে জেনে নেওয়া যাক লিচু সম্পর্কে সব গুরুত্বপূর্ণ তথ্য।

পেজ সূচিপত্রঃ লিচুর উপকারিতা ও অপকারিতা-লিচুতে কোন এসিড থাকে

ভূমিকা

লিচু ফলটি সবার কাছেই পরিচিত। এটি একটি রসালো ফল হিসেবে পরিচিত। লিচু সবাই খেতে পছন্দ করে। বিভিন্ন ঋতুতে বিভিন্ন ধরনের ফল পাওয়া যায়। আর এই বিভিন্ন ধরনের ফল দেহের বিভিন্ন পুষ্টি চাহিদা পূরণে সক্ষম। এরকম একটি ফল হচ্ছে লিচু। লিচুতে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন রয়েছে যা শরীরের বিভিন্ন পুষ্টির চাহিদা পূরণ করে। লিচুতে অধিক পরিমাণে রয়েছে মিনারেল এবং ভিটামিন। লিচুতে ফ্যাটের পরিমাণ খুবই কম বিধায় এটি সবার জন্য উপকার।

এই ফলটি গ্রীষ্মকালে প্রচুর পাওয়া যায়। গ্রীষ্মকালে এর চাহিদা অনেক বেড়ে যায়। লিচুতে বিভিন্ন ধরনের খনিজ উপাদান বিদ্যমান রয়েছে। লিচু কিন্তু ভিটামিন সি এর একটি ভালো উৎস হতে পারে। এই ভিটামিনের পাশাপাশি লিচুতে শ্বেতসার পাওয়া যায়। এগুলো ছাড়াও থিয়ামিন ,নিয়াসিন ইত্যাদি উপাদান গুলো রয়েছে। এই উপাদানগুলো থাকার কারণে লিচুর পুষ্টিগুণ আরো বেড়ে যায়।

লিচু থেকে ক্যালরি পাওয়া যায় বলে এটি দেহের শক্তি জোগাতে সক্ষম। লিচুর বিভিন্ন জাত রয়েছে যা সম্পর্কে জানা প্রয়োজন। সুতরাং লিচু সম্পর্কে সকল গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানতে হলে এই আর্টিকেল শেষ পর্যন্ত পড়তে হবে। আর নতুন নতুন তথ্য পাওয়ার জন্য এই ওয়েবসাইট নিয়মিত ভিজিট করুন।

লিচুর উপকারিতা

প্রিয় পাঠক এ পর্যায়ে আমরা জেনে নিব লিচুর উপকারিতা সম্পর্কে। লিচু খাওয়ার ফলে যে সকল উপকার হয় সে সম্পর্কে অনেকের জানা নেই। তাই সকলের জানা উচিত লিচুর উপকারিতা কি কি রয়েছে সে সম্পর্কে। তাহলে চলুন কথা না বাড়িয়ে জেনে নিন লিচুর উপকারিতা সম্পর্কে।
  • লিচুর প্রধান উপকারিতা হচ্ছে এটি হাড়কে শক্তিশালী করে তোলে। কারণ লিচুতে রয়েছে আয়রন, কপার, ক্যালসিয়াম ইত্যাদি উপাদান।
  • এছাড়াও লিচু ওজন কমানোর ক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। কারণ লিচুতে রয়েছে ফাইবার যা ওজন কমাতে সাহায্য করে।
  • লিচু হজম ক্রিয়ায় সাহায্য করে থাকে।
  • লিচুর আরও একটি অন্যতম উপকারিতা হচ্ছে এটি ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে থাকে। লিচুতে ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকার কারণে এটি ক্যান্সার রোধে সহায়তা করে থাকে।
  • রক্তের সঞ্চালন বৃদ্ধিতে সহায়তা করে থাকে এ লিচু।
  • এছাড়াও লিচু শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। ফলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।
  • যেহেতু লিচুতে ভিটামিন সি বিদ্যমান রয়েছে, সেহেতু এটি দেহের প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে থাকে।
  • লিচুতে পটাশিয়াম রয়েছে যা দেহের ক্ষতিকর টক্সিন বের করতে সহায়তা করে থাকে।
  • লিচু অনেক ভিটামিন সমৃদ্ধ একটি ফল। লিচু থেকে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন পাওয়া যায়। যেমন: ভিটামিন সি, কে, ই।
উপরোক্ত উপকারিতা গুলো ছাড়া আরও বিভিন্ন ধরনের উপকার হয় এই লিচু খেলে। তাই লিচু খেলে উপরোক্ত উপকারিতা গুলো পাওয়া সম্ভব।

লিচুর অপকারিতা

আমরা ইতিপূর্বে লিচুর উপকারিতা সম্পর্কে জেনেছি। এবার জানবো লিচুর অপকারিতা সম্পর্কে। লিচুর উপকারিতার পাশাপাশি কিছু অপকারিতা রয়েছে। এই অপকারিতা গুলো বিবেচনা করে লিচু খাওয়া উচিত। তাহলে চলুন জেনে নিন লিচুর অপকারিতা গুলো কি কি রয়েছে।
  • যদি অতিরিক্ত পরিমাণ লিচু খাওয়া হয় সেক্ষেত্রে রক্তচাপ অস্বাভাবিকভাবে কমে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
  • আরো একটি অপকারিতা হচ্ছে এটি যদি খালি পেটে খাওয়া হয় তাহলে বিষক্রিয়া সৃষ্টি হতে পারে।
  • রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা কমে যাওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
  • লিচুতে ক্যালসিয়াম, প্রোটিন ইত্যাদি না থাকার কারণে এটি অতিরিক্ত পরিমাণ খেলে শরীরের স্বাভাবিক ব্যালেন্স ক্ষুন্ন হতে পারে।
  • যারা ডায়াবেটিসের ওষুধ খেয়ে থাকেন তাদের লিচু খাওয়ার বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।
  • গর্ভাবস্থায় লিচু খেতে হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী লিচু খেতে হবে।
সুতরাং উপরোক্ত ক্ষতিকর দিকগুলো বিবেচনা করে লিচু খেতে হবে। আর অতিরিক্ত লিচু খেতে হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী কিছু খেতে হবে। তা না হলে ক্ষতির কারণ হতে পারে।

লিচু পাতার বৈশিষ্ট্য

অনেকেই লিচু পাতার বৈশিষ্ট্য বা উপকারিতা সম্পর্কে জানেনা। লিচু পাতার অনেক বৈশিষ্ট্য রয়েছে। নিম্নে লিচু পাতার বৈশিষ্ট্য বা উপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করা হলো।
  • দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
  • লিচু পাতায় এমন বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা ক্যান্সার প্রতিরোধে সক্ষম।
  • যদি শরীরের কোন অংশ কেটে যায় সে কাঁটা স্থানে লিচু পাতার রস সেই ক্ষতস্থানে দিলে ব্যথা অনেকাংশে কমে যায়।
  • লিচুর পাতায় ফাইবার থাকার কারণে এটি হজম ক্রিয়ায় সাহায্য করে থাকে।
  • লিচু পাতার আরেকটি অন্যতম বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এটি রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করে থাকে। ফলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
  • লিচু পাতায় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকার কারণে এটি ত্বককে সুন্দর করতে সাহায্য করে। ত্বকের ব্রণ, ফুসকুড়ি ইত্যাদি সমস্যা সমাধানে লিচু পাতা কার্যকরী।
  • লিচু পাতায় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যা সর্দি-কাশি নিরাময়ে খুবই সাহায্য করে থাকে।
উপরোক্ত বৈশিষ্ট্য গুলো ছাড়াও আরো বিভিন্ন ধরনের বৈশিষ্ট্য রয়েছে এই লিচু পাতার। তবে অনেকে এই লিচু পাতার বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে জানেনা। তাই উপরোক্ত আলোচনা মাধ্যমে জেনে গেলেন লিচু পাতার বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে।

লিচু কোন মাটিতে ভালো হয়

এবার আমরা জানবো লিচু কোন মাটিতে ভালো হয় সেই বিষয়ে। মোটামুটি ভাবে এদেশের প্রতিটা জেলায় লিচুর চাষ হয়ে থাকে। অনেক সুস্বাদু এবং রসালো ফল হওয়ায় এটি সবার কাছে খুবই পছন্দনীয়। লিচুতে রয়েছে ভিটামিন এবং মিনারেল যা শরীরের জন্য খুব উপকারী। কিন্তু অনেকেই জানে না লিচুর জন্য উপযুক্ত মাটি কোনটি। কারন লিচুর চাষ করতে হলে আগে মাটি নির্বাচন করতে হবে। যদি ভালো মাটি হয় সেখানে অধিক পরিমাণে লিচু উৎপাদন করা সম্ভব।
ভালো মাটি বলতে জৈব পদার্থ রয়েছে এবং মাটি খুব আদ্র এমন মাটি। এছাড়াও মাটিতে অম্লীয় রয়েছে এমন মাটি লিচু চাষের জন্য খুবই উপযুক্ত। সুতরাং আমরা এই আলোচনার মাধ্যমে জানতে পারলাম লিচু কোন মাটিতে ভালো হয়। এরকম নতুন নতুন তথ্য পেতে এই ওয়েবসাইট নিয়মিত ভিজিট করুন।

লিচুর ফলন বৃদ্ধির উপায়

লিচুর ফলন কিভাবে বৃদ্ধি করা যায় সে বিষয়ে জানা সকলের উচিত। লিচু অনেকে চাষাবাদ করে কিন্তু অনেকে জানে না এর ফলন কিভাবে বৃদ্ধি করা যায়। লিচুর ফলন বৃদ্ধি করতে হলে বেশ কিছু নিয়মকানুন মানতে হবে। লিচুর ফলন বৃদ্ধি করার জন্য সঠিক পরিমাণে সঠিক সময়ে সার প্রয়োগ করতে হবে। লিচুর ফলন বৃদ্ধি করতে হলে গোবর সার, ইউরিয়া, টিএসপি, পটাশ ইত্যাদি সঠিক পরিমাণে প্রয়োগ করতে হবে। গাছের গোড়া থেকে বেশ কিছু দূরে নালা করে নিতে হবে এবং সেখানে সার প্রয়োগ করে মাটি চাপ দিয়ে দিতে হবে।

আর লিচুর চাষ এখন বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং লিচু চাষাবাদ করে লাভবান হচ্ছে। অধিক ফলন পাবার জন্য এক্ষেত্রে কৃষিবিদের পরামর্শ অনুযায়ী সকল কার্যক্রম গ্রহণ করতে হবে। কতটুকু সার প্রয়োগ করতে হবে, কি পরিমান প্রয়োগ করতে হবে, কখন প্রয়োগ করতে হবে ইত্যাদি বিষয়গুলো কৃষিবিদের সঙ্গে পরামর্শ করে সার প্রয়োগ করা উচিত।
বি.দ্র: এক্ষেত্রে কৃষিবিদের পরামর্শ গ্রহণ করাই উত্তম হবে।

মুকুল আসার আগে লিচু গাছের পরিচর্যা

লিচু অনেক পুষ্টিকর একটি ফল। এটি রসালো এবং খেতে সুস্বাদু বলে সবাই এটি খেতে পছন্দ করে। লিচু গন্ধে স্বাদে অতুলনীয় একটি ফল। বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন এবং খনিজ উপাদান রয়েছে এই ফলে। এই খনিজ উপাদান এবং ভিটামিন গুলো শরীরে পুষ্টি যোগাতে সাহায্য করে। আর এই সুস্বাদু ফলটি সঠিকভাবে পরিচর্যা করা আবশ্যক। সঠিকভাবে পরিচর্যা না করলে এর ফলন কমে যেতে পারে। তাই অধিক ফলন পাওয়ার জন্য লিচু গাছের পরিচর্যা করা খুবই প্রয়োজনীয়। তাই এক্ষেত্রে মুকুল আশা পূর্বে লিচু গাছের কিছু করণীয় রয়েছে। যেমন সঠিক সময়ে সার প্রয়োগ করা, পানি সেচের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা করা ইত্যাদি বিষয়গুলো মাথায় রাখতে হবে।
তাই এক্ষেত্রে কৃষিবিদের সাহায্য গ্রহণ করা উচিত। কারণ কি পরিমান সার প্রয়োগ করতে হবে কখন প্রয়োগ করতে হবে ইত্যাদি বিষয়গুলো জানার জন্য কৃষিবিদের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে। কৃষিবিদের পরামর্শ অনুযায়ী মুকুল আসার পূর্বে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাগুলো গ্রহণ করতে হবে। তাহলে এক্ষেত্রে অধিক ফলন পাবার সম্ভাবনা রয়েছে।

লিচু গাছে কোন মাসে ফুল আসে

এবার আমরা জানবো লিচু গাছে কোন মাসে ফুল আসে সেই সম্পর্কে। অনেকেই জানে আবার অনেকে জানে না লিচু গাছে কোন মাসে ফুল আসে। ফুল সাধারনত মাঘ-ফাল্গুন মাসে ধরা শুরু করে। এই সময় লিচু গাছে ফুল ধরতে শুরু করে। লিচু গাছে ফুল আসার আগে কিছু পোকা আক্রমণ করে এবং গাছের ক্ষতি করে থাকে। এ সময় গাছের বেশি করে পরিচর্যা করতে হয়। তা না হলে গাছের বা মুকুলের ক্ষতি করে থাকে। সবচেয়ে ভালো হয় কৃষিবিদের সাথে পরামর্শ অনুযায়ী সকল কার্যক্রম গ্রহণ করা।

লিচু গাছে মুকুল না আসার কারণ

লিচু গাছে মুকুল না আসার বিভিন্ন কারণ রয়েছে। এই কারণগুলোকে আগে চিহ্নিত করতে হবে। কারণ হলো চিহ্নিত করতে না পারলে সমাধান করা কষ্টকর হয়ে যাবে। কিন্তু মুকুল আসার অন্তত দুই থেকে তিন মাস আগে গাছে সকল প্রকার সার দেওয়া পানি দেওয়া ইত্যাদি বন্ধ করতে হবে। কারণ পরিচর্যা শুরু করলে নতুন শাখা-প্রশাখা বের হওয়া শুরু করে।
এর ফলে মুকুল আসার সম্ভাবনা অনেক অংশে কমে যায়। কারণ পুরাতন মূলে বা শাখায় মুকুল ধরা শুরু করে। তাই এক্ষেত্রে কৃষিবিদের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে। তাদের সাথে আলোচনা করতে হবে মুকুল না আসার কারণ সম্পর্কে। তাহলে তারা এর কারণ ব্যাখ্যা সহ সমাধান সম্ভব পর হবে।

শেষ কথা

পরিশেষে, লিচুর মৌসুমে লিচুর চাহিদা ব্যাপক বেড়ে যায়। এটি বাজারে বেশিদিন থাকে না। বাজারে অল্প সময় থাকে বলে এর চাহিদা দ্বিগুণ হয়ে যায়। আর এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আমরা আর জানতে পারলাম লিচুর উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে। আরো জানতে পারলাম লিচু কোন মাটিতে ভালো হয়, লিচুর পাতার বৈশিষ্ট্য, লিচু গাছের মুকুল না আসার কারণ সম্পর্কে। আশা করি এই আর্টিকেল পড়ে লিচু সম্পর্কে সকল তথ্য জানতে পেরেছেন এবং উপকৃত হয়েছেন।

তাই উপকৃত হয়ে থাকলে এই আর্টিকেলটি বেশি বেশি শেয়ার করে দিন। আপনার শেয়ারের মাধ্যমে অন্যজনের উপকৃত হবে। আর এরকম নতুন নতুন তথ্য পেতে এই ওয়েবসাইট নিয়মিত ভিজিট করুন। আর্টিকেলটি ধৈর্য সহকারে পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। সুস্থ থাকুন, ভালো থাকুন।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url