মাথা ব্যাথা কোন রোগের লক্ষণ-মাথা ব্যাথা হলে করণীয়


আসসালামু আলাইকুম। মাথা ব্যাথা অতি পরিচিত একটি সমস্যা। প্রায় লোকের এই সমস্যা হয়ে থাকে। মাথাব্যাথা যন্ত্রণাদায়ক এবং অস্বস্তিকর একটি সমস্যা। কিন্তু এই মাথা ব্যাথা কেন হয় এবং মাথা ব্যাথা হলে করণীয় কি ইত্যাদি সম্পর্কে অনেকের ধারণা নেই। আবার মাথা ব্যাথা হলে কোন রোগের লক্ষণ প্রকাশ পায় সেই সম্পর্কেও ধারণা নেই।
মাথা ব্যাথা কোন রোগের লক্ষণ-মাথা ব্যাথা হলে করণীয়
তাই মাথা ব্যাথা কোন রোগের লক্ষণ এবং মাথা ব্যাথা হলে সেক্ষেত্রে করণীয় কি ইত্যাদি সম্পর্কে ধারণা থাকতে হবে। এই সকল বিষয়গুলো জানার জন্য এই আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ধৈর্য সহকারে পড়তে হবে।

পেজ সূচিপত্রঃ মাথা ব্যাথা কোন রোগের লক্ষণ-মাথা ব্যাথা হলে করণীয়

ভূমিকা

মাথা ব্যাথা খুবই পরিচিত একটি বিষয়। এমন অনেক ব্যক্তি আছে যাদের এই সমস্যাটা প্রায়ই হয়ে থাকে। যখন মাথা যন্ত্রণা শুরু হয় তখন অনেক অস্বস্তিকর বোধ হয়। কিন্তু এই মাথা ব্যাথা বিভিন্ন কারণে হয়ে থাকে। এই মাথা ব্যাথা কখনো কখনো পুরো মাথাতেই হয়ে থাকে। আবার কখন কখন নির্দিষ্ট অংশে হয়। বিভিন্ন ধরনের মানসিক চিন্তা, অতিরিক্ত ধূমপান, পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুম না হওয়া ইত্যাদির কারণে মাথা ব্যাথা হতে পারে। এই মাথা ব্যাথা অনেকের কাছে ছোট সমস্যা মনে হয় এবং একে অবহেলা করে থাকে। কিন্তু এই মাথা ব্যাথা কোন রোগের লক্ষণ হতে পারে সেটা জানতে হবে। তাই এই মাথা ব্যাথাকে অবহেলা না করে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে।

মাথা ব্যাথা কোন রোগের লক্ষণ

অধিকাংশ লোক এই সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন। যেহেতু মাথাব্যথা যন্ত্রণাদায়ক বা অস্বস্তিকর বিষয়, সেহেতু মাথাব্যথা শুরু হলে কোন কাজে মন বসে না। আর এই মাথা ব্যাথা হওয়ার পেছনে অনেক কারণ রয়েছে। এমন অনেক ব্যক্তি রয়েছে যাদের প্রতিনিয়ত মাথা ব্যাথা হয়ে থাকে। প্রতিদিন মাথা ব্যাথা হলে এটা কোন ভালো লক্ষণ নয়। অর্থাৎ মাথা ব্যাথার পিছনে বড় কোন কারণ রয়েছে। আবার এমন অনেকে আছে যাদের বছরে দুই একবার মাথা ব্যাথা হয়। কারণ বছরে দুই একবার মাথা ব্যথা এটা সাধারণত স্বাভাবিক হিসেবে ধরে নেওয়া হয়। এতে করে বড় ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হওয়ার সম্ভাবনা কম। 

তবে নিয়মিত মাথা ব্যথা হলে মাইগ্রেন, টেনশন হেডেক,ক্লাস্টার হেডেক ইত্যাদি সমস্যা গুলো দেখা দিতে পারে। আবার অনেক সময় উচ্চ রক্তচাপের কারণেও মাথা ব্যাথা হতে পারে। এছাড়াও আমাদের যখন মাথা ব্যাথা হয় তখন আমরা বিভিন্ন ধরনের ওষুধ খেয়ে থাকি। এই ওষুধগুলো অতিরিক্ত ব্যবহার করার ফলেও মাথা ব্যাথা হতে পারে। মাথা ব্যাথার আরও একটি লক্ষণ হচ্ছে টিএমজে।আবার অনেক সময় দেখা যায় এলার্জির কারণে মাথা ব্যাথা হতে পারে। যেমনঃ সাইনাস এলার্জি।
তাহলে বোঝা যাচ্ছে, যখন মাথাব্যথা হয় তখন বুঝতে হবে উপরোক্ত লক্ষণগুলো থাকার সম্ভাবনা অনেক বেশি। বদহজম হলেও মাথা ব্যথা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। মাথায় টিউমার থাকার ফলে মাথা ব্যাথা শুরু হয়। এছাড়াও আরো বিভিন্ন লক্ষণ রয়েছে যেগুলো মাথা ব্যাথার কারণ হিসেবে গণ্য করা হয়। মাথা ব্যাথা হলে আরও বিভিন্ন লক্ষণ প্রকাশ পায়।

তাহলে মাথা ব্যাথা কোন রোগের লক্ষণ সেটা অবশ্যই জানতে পেরেছেন। সেগুলো জানার জন্য এই ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ভিজিট করুন। আর অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত এবং চিকিৎসকের চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে।

মাথা ব্যাথা হলে করণীয়

মাথা ব্যাথা খুবই যন্ত্রণাদায়ক একটি সমস্যা। এই মাথা ব্যাথা শুরু হলে সকল কাজগুলোকে বিরক্তিকর মনে হয়। তাই যখন মাথা ব্যথা হবে তখন কিছু করণীয় রয়েছে। যেগুলো পালন করার মাধ্যমে মাথা ব্যাথা থেকে অনেকাংশে পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব। সেই করণীয় গুলো হচ্ছেঃ 
  • প্রথমত মাথা ব্যাথা শুরু হলে আপনি মাসাজ করলে মাথা ব্যাথা অনেক কমে যায়।
  • অতিরিক্ত ধূমপান, মদ্যপান পরিহার করতে হবে।
  • পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম এবং বিশ্রাম দুটোই প্রয়োজন।
  • প্রচুর পরিমাণ পানি পান করতে হবে।
  • মাথা ব্যাথা থেকে পরিত্রাণ পেতে হলে সঠিক সময় খাবার খেতে হবে।
তাই বলা যায় উপরোক্ত করণীয়গুলো ছাড়া আর বিভিন্ন ধরনের কাজ রয়েছে যেগুলো মাথা ব্যাথা শুরু হলে এই কাজগুলো করা উচিত। আর জটিল অবস্থার সৃষ্টি হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী তাদের দিক নির্দেশনা পালন করতে হবে।

মাথা যন্ত্রণা কমানোর ঘরোয়া উপায়

প্রিয় পাঠক এ পর্যায়ে আমরা জানবো মাথা যন্ত্রণা কমানোর ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে। বিভিন্ন কারণে মাথা যন্ত্রণা বা মাথা ব্যথা হয়ে থাকে। ঠিকমতো বিশ্রাম না নেওয়া, অতিরিক্ত কাজের চাপ ইত্যাদি কারণে মাথাব্যথা হতে পারে। তবে মাথা ব্যথা অতিরিক্ত হয়ে গেলে সেক্ষেত্রে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে এবং কোন ঔষুধ খাওয়ার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী খাওয়া উচিত। তবে এক্ষেত্রে কিছু ঘরোয়া উপায় রয়েছে যেগুলো মাথাব্যথা দূর করতে সক্ষম। চলুন জেনে নিই সেই ঘরোয়া উপায় গুলো সম্পর্কে।
  • ঘরে অতিরিক্ত আলো থাকলে সে ক্ষেত্রে মাথা ব্যথা হতে পারে। তাই ঘরের আলো কমিয়ে দিতে হবে।
  • চা বা কফি খেলে মাথা যন্ত্রণা অনেকাংশে কমে যায়।
  • অতিরিক্ত মাথা যন্ত্রণা হলে সেক্ষেত্রে বিশ্রাম নিতে হবে।
  • মাথা যন্ত্রণা অধিকতর হয়ে গেলে গোসল করতে পারেন। মাথায় ঠান্ডা পানি দেওয়ার ফলে মাথা যন্ত্রণা অনেকাংশে কমে যাবে।
  • মাথা যন্ত্রণায় ঘাড়ে এবং কপালে গরম সেঁক দিতে হবে। তাহলে মাথা যন্ত্রণা অনেকাংশে কমে যায় এবং আরাম পাওয়া যায়।
  • মাথা যন্ত্রণা কমানোর ক্ষেত্রে আদা খুবই কার্যকর একটি ঘরোয়া উপাদান।
  • তুলসী পাতা হাতে ঘষে সেটি কপালে ব্যবহার করলে মাথা যন্ত্রণা থেকে অনেক আরাম পাওয়া যায়।
সুতরাং উপরোক্ত ঘরোয়া পদ্ধতি গুলো ব্যবহার করলে মাথা যন্ত্রণা অনেকাংশেই লাঘব করা সম্ভব। তবে যে কোন ওষুধ কিংবা কোন পদ্ধতি গ্রহণ করার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

ঠান্ডায় মাথা ব্যথা হলে করণীয়

অনেক সময় দেখা যায় ঠান্ডায় অনেকের মাথা ব্যথা হয়। মাথা ব্যাথার সাথে সাথে কাশি সহ আরো বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। তাই এই মাথাব্যথার যন্ত্রণা থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য কিছু করণীয় রয়েছে। এই করণীয় গুলো অনুসরণ করে চললে মাথাব্যথা থেকে অনেকাংশে পরিত্রাণ পাওয়া যায়। এক্ষেত্রে গরম চা খেতে পারেন। তবে চায়ের সাথে আদা মিশিয়ে খেলে বেশি উপকার পাওয়া যায়।
এছাড়াও মাথাব্যথা উপশমের ক্ষেত্রে লেবু অনেক উপকারী একটি উপাদান। শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে এই লেবু। শীতকালে অনেক শাকসবজি পাওয়া যায়। বিভিন্ন ধরনের শাকসবজি খাওয়ার ফলে শরীরের ভিটামিনের অভাব গুলো পূরণ হয়ে থাকে। এই সময় গরম পানি দিয়ে গোসল করতে পারেন এবং গরম পানি খেলে অনেক উপকার পাওয়া যায়।

বিঃদ্রঃ তবে কোন কিছু খাওয়ার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

মাথা ভারি হয়ে থাকলে করণীয়

বিভিন্ন কারণে মাথা ভারী হয়ে থাকে। যখন মাথা ভারী হয়ে যায় তখন অস্বস্তিকর বোধ হয়। তাই এই সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য কিছু করণীয় অনুসরণ বা অনুকরণ করতে হয়। মাথা ভারী হয়ে থাকলে লাল চা খেতে পারেন। এক্ষেত্রে অনেক আরাম বোধ মনে হয়। মাথা ভারী হয়ে থাকলে পর্যাপ্ত বিশ্রাম নেওয়ার প্রয়োজন। শরীরকে সুস্থ রাখতে বিশ্রাম অবশ্যই প্রয়োজন। 

মাথা ভারী হয়ে থাকলে মেনথলের ব্যবহার ব্যাপকভাবে লক্ষ্য করা যায়। এটি ব্যবহারে অনেক উপকার পাওয়া যায়। এছাড়া আরও বিভিন্ন ধরনের কাজ রয়েছে যেগুলো পালন করলে এই সমস্যা থেকে অনেকাংশে পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব। আর কিছু ব্যবহার কিংবা খাওয়ার আগে অবশ্যই বিশেষজ্ঞের বা চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

মাথার তালুতে ব্যথা কারণ

অনেক সময় মাথার তালুতে ব্যথা হয়ে থাকে। আমরা অনেকেই এই ব্যথাকে ছোট মনে করে অবহেলা করে থাকি। আসলে যে কোন জিনিসকে গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা উচিত। মাথার তালুতে সাধারণত মানসিক চাপ কিংবা মানসিক চিন্তা বেশি করলে এ ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। তবে এই ধরনের সমস্যা দেখা দিলে কোন ওষুধ গ্রহণের আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

মাথার তালুতে ব্যথা হলে করণীয়

উপরের আলোচনায় বলা হয়েছে কি কারনে মাথার তালুতে ব্যথা হতে পারে। তবে মাথার তালুতে ব্যথা হওয়ার আরো অনেক কারণ থাকতে পারে। তাই মাথার তালুতে ব্যথা হলে এক্ষেত্রে কিছু করণীয় রয়েছে, যা পালন করলে এই ব্যাথা অনেকাংশে কমে যায়। সাধারণত ঘুম পর্যাপ্ত না হলে সেক্ষেত্রে পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুমের প্রয়োজন। ঘুমের পাশাপাশি বিশ্রাম নিতে হবে। শরীরকে সুস্থ রাখতে চাইলে বিশ্রাম খুবই প্রয়োজন। তাই আমরা উপরের করণীয়গুলো অনুসরণ করার চেষ্টা করব এবং এরকম সমস্যা দেখা দিলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

ঘন ঘন মাথা ব্যাথার কারণ কি

মাথা ব্যথা সবার কাছে পরিচিত একটি সমস্যা। প্রায় লোকই এই সমস্যার সম্মুখীন হয়ে থাকে। সবার কাছে এটি একটি স্বাভাবিক সমস্যা হিসেবে বিবেচিত। কিন্তু এই মাথাব্যথা অনেক সময় বড় সমস্যার সৃষ্টি করে থাকে। আর এই মাথা ব্যথার বিভিন্ন কারণ রয়েছে। যে কারণগুলোর ফলেই সাধারণত মাথা ব্যথা হয়ে থাকে। পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম না হওয়ার কারণেও মাথা ব্যাথা হতে পারে।

মানসিক দুশ্চিন্তার কারণে মাথাব্যথা হয়ে থাকে। এছাড়াও মাথায় কোন আঘাত পেয়ে থাকলে মাথা ব্যথা হতে পারে। আবার অতিরিক্ত ধূমপান, মদ্যপান ইত্যাদির কারণেও মাথা ব্যথা হয়ে থাকে। উপরোক্ত কারণগুলো ছাড়াও আরো বিভিন্ন কারণ রয়েছে যেগুলোর কারণে ঘন ঘন মাথা ব্যথা হয়ে থাকে। সুতরাং এরকম সমস্যা দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করুন এবং ওষুধ সেবন করুন।

শেষ কথা

অবশেষে, মাথা ব্যথা অনেকের কাছে স্বাভাবিক হলেও, এটি একটি অস্বস্তিকর এবং যন্ত্রণাদায়ক সমস্যা। এই মাথা ব্যথাকে অবহেলা না করে গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করতে হবে। আর এই আর্টিকেলে আমরা জানতে পারলাম মাথা ব্যাথা কোন রোগের লক্ষণ, মাথা ব্যাথা হলে কি কি করণীয় রয়েছে, কি কি কারনে মাথা ব্যাথা হতে পারে ইত্যাদি বিষয়ে সম্পর্কে। আর অতিরিক্ত মাথা ব্যথা হলে সে ক্ষেত্রে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

তাই আশা করি এই আর্টিকেলটি পড়ে উপকৃত হয়েছেন। উপকৃত হয়ে থাকলে আর্টিকেলটি বেশি বেশি শেয়ার করে দিন এবং নতুন নতুন তথ্য পেতে এই ওয়েবসাইট নিয়মিত ভিজিট করুন। আর্টিকেলটি ধৈর্য সহকারে পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। সুস্থ থাকুন, ভালো থাকুন।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url